পাতা:এপিক্‌টেটসের উপদেশ - জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৮
এপিক্‌টেটসের উপদেশ।

একবারও ভাবিয়া দেখি না। যাহা আমাদের ইচ্ছাশক্তির অতীত, সেই বিষয়েই আমাদের যত কিছু ভয়।

 যে মৃত্যু অপরিহার্য্য, যে সকল দুঃখ দুরতিক্রমণীয়, তাহা হইতেই আমরা ভয় পাই, ভয় পাইয়া পলায়নের চেষ্টা করি। আমাদের স্বাভাবিক সাহসকে আমরা অস্থানে নিয়োগ করিয়া, কাণ্ডাকাণ্ড জ্ঞানশূন্য হইয়া, অতি নির্লজ্জভাবে সম্পূর্ণরূপে পাপের হস্তে আত্মসমর্পণ করি এবং উহাকে ভীরুতা, নীচতা, অন্ধ-আতঙ্ক, ও দুঃখকাতরতায় পরিণত করি। যদি আমাদের ভয়ের ভাবকে ইচ্ছারাজ্যের মধ্যে আনিয়া ফেলিতে পারি, তাহা হইলে আমাদের ভয়ের বিষয়কে ইচ্ছাপূর্ব্বক পরিহারও করিতে পারি। কিন্তু যে বিষয় আমাদের ইচ্ছায়াত্ত নহে, তাহাতে ভয় পাইলে, আমরা ইচ্ছা করিলেও পরিহার করিতে পারি না। সুতরাং বৃথা ভয়ে বিচলিত হইয়া অনর্থক কষ্ট পাই।

 কেন না, মৃত্যুও ভয়ঙ্কর নহে, দুঃখও ভয়ঙ্কর নহে, পরন্তু দুঃখ ও মৃত্যুর ভয়ই ভয়ঙ্কর। এই নিমিত্ত আমরা সেই কবিকে প্রশংসা করি যিনি বলিয়াছিলেন:—

“মরিতে কোরো না ভয়, কেবল করিও ভয় ভীরুর মরণে”।

 ৩। অতএব মৃত্যুকে ভয় না করিয়া মৃত্যুভয়কেই ভয় করা উচিত। কিন্তু আমরা ইহার ঠিক বিপরীত আচরণ করি। মৃত্যু হইতে আমরা পলায়ন করি, কিন্তু মৃত্যুটা যে কি জিনিস সে বিষয় একটুও বিবেচনা করিয়া দেখি না;— সে বিষয়ে আমরা একেবারেই উদাসীন। সক্রেটিস্ এই জিনিসগুলাকে “জুজু” বলিয়া অভিহিত করিয়াছিলেন। তিনি ঠিক্ কথাই বলিয়াছেন। কেননা, কদাকার মুখগুলা, অবোধ শিশুদিগের নিকটেই ভীষণ ও ভয়ঙ্কর বলিয়া মনে হয়; এই “জুজু” দেখিয়া শিশুরা যেরূপ ভয় পায়, আমরাও ঠিক্ সেইরূপ সংসারের কোন কোন