পাতা:এপিক্‌টেটসের উপদেশ - জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ভয় ও অভয়।
২৯

ঘটনায় ভয়-বিহ্বল হইয়া পড়ি। শিশু কি?—শিশু মূর্ত্তিমান অজ্ঞানেরই নামান্তর মাত্র। যে কিছুই শিক্ষা করে নাই, সেই শিশু। কেন না, শিশু যদি শিক্ষিত হয়, অভিজ্ঞ হয়, তাহা হইলে সে আর শিশু থাকে না, তখন সে আমাদেরই সমকক্ষ। মৃত্যু কি?—মৃত্যু একটা “জুজু”। উহাকে নাড়িয়া-চাড়িয়া দেখ—পরীক্ষা করিয়া দেখ, উহা তোমাকে কামড়ায় কি না দেখ।— শীঘ্রই হউক, বিলম্বেই হউক, এক সময়ে এই শরীর আত্মা হইতে বিযুক্ত হইবে;—পূর্ব্বেও হইয়াছিল। এখনই যদি বিযুক্ত হয়, তাহাতে তোমার এত রাগ কেন? কেন না, এখন যদিও না হয়, কিছুকাল পরে তো হইবেই। আচ্ছা। এইরূপ বিযুক্ত হইবার কারণটা কি?—উদ্দেশ্য কি?—কাল-চক্রের ভ্রমণকাল যাহাতে সম্পূর্ণ হয়,—ইহাই উদ্দেশ্য। কেন না,—বর্ত্তমান, ভবিষ্যৎ, অতীত এই তিনই জগতের পক্ষে আবশ্যক।

 দুঃখ কি?—দুঃখও একটা “জুজু”! উহাকে নাড়িয়া চাড়িয়া দেখ, পরীক্ষা করিয়া দেখ। এই শরীর-বেচারাকে কখন মৃদুভাবে, কখন কঠোরভাবে প্রকৃতি এক একবার নাড়াইয়া ঝাঁকাইয়া দেন। যদি ইহাতে কোন ফল না পাও, মৃত্যুর দ্বার তো খোলাই আছে। যদি ফল আছে বোধ কর, তবে সহ্য করিয়া থাক। সব সময়েই দরজাটা খোলা রাখাই ভাল, তাহা হইলে আর কোন কষ্ট পাইতে হয় না।

 ৪। তবে কি, আমার অস্তিত্ব থাকিবে না?—অবশ্যই থাকিবে, কিন্তু বিশ্বের প্রয়োজন-অনুসারে রূপান্তরে থাকিবে। তুমি নিজে আপনার সময়-অনুসারে এই পৃথিবীতে আইসো নাই; বিশ্বের যখন প্রয়োজন হইল তখনই তুমি আসিয়াছ।

 ৫। এই মতটি অনুসরণ করিলে কি ফল লাভ হইবে? যাঁহারা প্রকৃত শিক্ষা লাভ করিয়াছেন—তাঁহাদের নিকট যাহা সর্ব্বাপেক্ষা