পাতা:এপিক্‌টেটসের উপদেশ - জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৪৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৮
এপিক্‌টেটসের উপদেশ।

 ৫। হে মনুষ্য! আর কিছুতেই উন্মত্ত হইও না;—শুধু শান্তির জন্য, মুক্তির জন্য, মহত্ত্বের জন্য উন্মত্ত হও। দাসত্ব হইতে মুক্ত হইয়া উন্নত মস্তকে দণ্ডায়মান হও। ঊর্দ্ধে ঈশ্বরের দিকে তাকাইয়া, সাহস পূর্ব্বক এই কথা বল:—“এখন হইতে প্রভো, তোমার যাহা ইচ্ছা, তাহাই আমার প্রতি বিধান কর; তোমার যাহা ইচ্ছ, আমারও তাহাই ইচ্ছা;—আমি তোমারি। তোমার যাহা ভাল মনে হয় আমি তাহা কখনই পরিত্যাগ করিব না; যেখানে ইচ্ছা তুমি আমাকে লইয়া যাও, যে রূপ সজ্জায় আমাকে সজ্জিত করিতে চাহ, সেইরূপ সজ্জাতেই আমাকে সজ্জিত কর। তোমার কি ইচ্ছা,—আমি প্রভুত্ব করি, কিংবা সামান্য লোকের মত থাকি, কিংবা গৃহে অবস্থান করি, কিংবা নির্ব্বাসিত হই, কিংবা দারিদ্র্য ভোগ করি, কিংবা ঐশ্বর্য্য সম্ভোগ করি? যাহা তুমি বিধান করিবে, তাহাই আমি লোকের নিকট সমর্থন করিব, তাহাই উপাদেয় বলিয়া সর্ব্ব-সমক্ষে প্রতিপাদন করিব।”

 অতএব, যাহা তোমার পক্ষে বাস্তবিক অমঙ্গল, তাহাই মন হইতে দুর করিয়া দেও। দুঃখ, ভয়, লোভ, ঈর্ষা, মাৎসর্য্য, বিলাসিতা, ভোগাভিলাষ—এই সমস্ত মন হইতে অপসারিত কর। কিন্তু যতক্ষণ তুমি ঈশ্বরের প্রতি দৃষ্টি স্থির না রাখিবে—তাঁহার দ্বারা পরিচালিত না হইবে—তাঁহার পদে জীবন উৎসর্গ করিয়া তাঁহার আদেশ পালন না করিবে, ততক্ষণ ঐ সকল কুপ্রবৃত্তি তোমার মন হইতে কিছুতেই দুর হইবে না। এ ছাড়া তুমি যদি অন্য পথে যাও, তোমা অপেক্ষা প্রবলতর শক্তি আসিয়া তোমাকে অভিভূত করিয়া ফেলিবে। চিরকাল তুমি বাহিরে বাহিরে সুখ-সৌভাগ্য অন্বেষণ করিবে, অথচ কস্মিনকালেও তাহা পাইবে না। কেননা, তুমি সেইখানে উহা অন্বেষণ করিতেছ যেখানে