পাতা:এপিক্‌টেটসের উপদেশ - জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৫৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
অভ্যাস ও সাধনা।
৪৩

না; যখনি আবার কোন প্রলোভন আসিবে, তখন পূর্ব্বাপেক্ষা আরো শীঘ্র তোমার বাসনানল প্রজ্বলিত হইয়া উঠিবে। এইরূপ যখন ক্রমাগত ঘটিতে থাকিবে, তখন তোমার আত্মা ক্রমশঃ অসাড় হইয়া পড়িবে; এই দুর্ব্বলতা প্রযুক্ত, তোমার ধনলালসাও আরো প্রবল হইয়া উঠিবে। যে ব্যক্তি একবার জ্বর-রোগে আক্রান্ত হইয়াছে, তাহার জ্বর ত্যাগ হইলেও,সম্পূর্ণ আরোগ্য লাভ না করিলে, সে আর পূর্ব্বাবস্থা প্রাপ্ত হয় না। আত্মার রোগেও এইরূপ হইয়া থাকে। রোগের পর, আত্মায় যে সকল ক্ষতচিহ্ন থাকিয়া যায়, সেই ক্ষতচিহ্নগুলিকে যদি একেবারে নির্ম্মূলিত না কর, আর সেই স্থানে আবার যদি কখনও পাপের আঁচ লাগে, তাহা হইলে, সেই ক্ষতচিহ্নগুলি তখন আর চিহ্নমাত্র থাকে না, তখন সেইখানে আবার “দগ্‌দগে ঘা” হইয়া পড়ে।

 ৩। “আমার কোপন-স্বভাব চলিয়া যাউক”—এই রূপ যদি তোমার ইচ্ছা হয়, তাহা হইলে উহার প্রবণতাকে পোষণ করিও না; উহাতে এমন কোন আহুতি প্রদান করিও না যাহাতে উহা আরো জ্বলিয়া উঠে; প্রথম হইতেই শান্তভাব ধারণ কর; এবং বিনা ক্রোধে কতদিন অতিবাহিত হইল তাহার গণনা করিতে থাক;—“এইবার আমি একদিন ক্রুদ্ধ হই নাই;—এইবার, দুই দিন ক্রুদ্ধ হই নাই;—এইবার, তিন দিন ক্রুদ্ধ হই নাই”;—এইরূপ যদি ৩০ দিন ক্রুদ্ধ না হইয়া থাকিতে পার, তখন দেবতার উদ্দেশে যজ্ঞাদির অনুষ্ঠান করিবে। এইরূপে প্রবণতাগুলি ক্রমশঃ দুর্ব্বল হইয়া, একেবারেই নির্ম্মূলিত হইবে।

 ৪। ইহাতে সুসিদ্ধ কিরূপে হওয়া যায়? আত্মপ্রসাদ লাভ করিব,—ঈশ্বরের সমক্ষে নিষ্কলঙ্ক সুন্দর থাকিব—এইরূপ দৃঢ়সঙ্কল্প হৃদয়ে ধারণ কর; আমি আমার নির্ম্মল অন্তরাত্মার নিকটে নির্ম্মল থাকিব, ঈশ্বরের নিকটে বিশুদ্ধ থাকিব—সর্ব্বান্তঃকরণে এইরূপ ইচ্ছা কর।