পাতা:এপিক্‌টেটসের উপদেশ - জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৫৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪৮
এপিক্‌টেটসের উপদেশ।

কার্য্য ও উদ্দেশ্যও বিভিন্ন হইবে। যদি কোন দৈহিক প্রকৃতি শুধু ইন্দ্রিয়-প্রতীতি অনুসারে চলিবার উপযোগী হয়, তবে তাহাই তাহার পক্ষে যথেষ্ট। কিন্তু যেখানে ইন্দ্রিয়-প্রতীতির ব্যবহার-সম্বন্ধে পর্য্যবেক্ষণ ও অনুশীলন আবশ্যক, সেখানে পর্য্যবেক্ষণ ও অনুশীলন শক্তির যথাযথ প্রয়োগ না হইলে প্রকৃত উদ্দেশ্য সিদ্ধ হইবে না। তুমি তবে বলিতে চাহ কি? ঈশ্বর অন্যান্য জীবজন্তুকে বিশেষ বিশেষ কার্য্যের জন্য সৃষ্টি করিয়াছেন,—কাহাকে ভূমি কর্ষণের জন্য, কাহাকে দুগ্ধ দিবার জন্য, কাহাকে বা ভার বহনের জন্য। ইন্দ্রিয়-প্রীতি-সম্বন্ধে পর্য্যবেক্ষণ ও অনুশীলন করা—ভেদাভেদ নির্ণয় করায় তাহাদের প্রয়োজন কি? কিন্তু ঈশ্বর ও তাঁহার রচনার সাক্ষীরূপে—শুধু সাক্ষী নহে—ব্যাখ্যাতারূপে মনুষ্য এই জগতে আসিয়াছে। অতএব মূঢ় ইতর জীবেরা যে সকল কাজ করে—শুধু তাহাতেই শেষ করা মানুষের পক্ষে বিশেষ লজ্জার কথা। ইতর জীবেরা যেখান হইতে আরম্ভ করে, মানুষ ও সেখান হইতে আরম্ভ করুক,—কিন্তু মানব-প্রকৃতির যেখানে শেষ হইয়াছে, সেইখানে গিয়াই যেন মানুষ তাহার কার্য্য শেষ করে। আমাদের প্রকৃতির শেষ কোথায়?—না, ধ্যানধারণায়। ইন্দ্রিয়-প্রতীতির সহিত কিসে মিল হয়, আমাদের প্রকৃতি নিয়তই তাহার জন্য চেষ্টা ও অনুশীলন করিতেছে। এই সকল, না দেখিয়া শুনিয়া তোমরা যেন ইহলোক হইতে অপসৃত না হও।

 ৪। কিন্তু তোমার বলিবার অভিপ্রায় কি? এই সকল ইতর জীবেরাও কি ঈশ্বরের সৃষ্টি নহে? অবশ্যই ঈশ্বরের সৃষ্টি। কিন্তু ঈশ্বরের পরা-সৃষ্টি নহে। উহাদের মধ্যে ঈশ্বরাংশ নাই। কিন্তু তুমি একটি পরম পদার্থ। তুমি ঈশ্বরের একটি অংশ। কোন্ উচ্চকুলে তোমার জন্ম, তাহা কি তুমি জান না? জাননা তুমি কোথা হইতে