পাতা:এপিক্‌টেটসের উপদেশ - জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৬২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৫২
এপিক্‌টেটসের উপদেশ।

লোকে চলিয়া যাইবে? তাই তিনি এখন তাঁহার অবিবেচনার ফল ভোগ করিতেছেন। কিন্তু তুমি কেন ক্রন্দন করিতেছ? তোমার প্রিয় বস্তুর সহিত তুমি চিরকাল একত্র বাস করিতে পারিবে, অবোধ রমণীর ন্যায় তুমিও কি তাই ভাবিতেছ? সেই সব প্রিয়জনকে দেখিতে পাইতেছ না —সেই সব প্রিয় স্থানে যাইতে পারিভেছ না বলিয়া তুমি এখন কাঁদিতেছ? তুমি তবে কাক-বায়সাদি অপেক্ষাও হতভাগ্য। তাহারা যথাইচ্ছা উড়িয়া যায়, নীড় পরিবর্ত্তন করে, সমুদ্রপারে গমন করে;—যাহা কিছু পশ্চাতে ফেলিয়া যায়, তাহার জন্য বিলাপ করে না—তাহার জন্য লালায়িত হয় না।

 —“হাঁ, তাহারা এইরূপই বটে, কেন না তাহারা বুদ্ধিহীন জীব”। তবে কি দেবতারা এই জন্যই আমাদিগকে বুদ্ধি-বিবেচনা দিয়াছেন যে আমরা চিরকালের জন্য অসুখী হই? এসো তবে আমরা সকলেই অমর হই, বিদেশে যেন আমরা কখন না যাই, বৃক্ষাদির ন্যায় একস্থানেই বদ্ধমূল হইয়া থাকি। যদি আমাদের কোন সঙ্গী আমাদের ছাড়িয়া চলিয়া যায়, তবে এসো আমরা তাহার জন্য কেবল বসিয়া বসিয়া কাঁদি; আবার সে ফিরিয়া আসিলে শিশুর ন্যায় হাত তালি দিয়া নৃত্য করি!

 ৩। এখনও কি তবে আমাদের স্তন্য ছাড়িবার বয়স যায় নাই? তত্ত্বজ্ঞানীদের কথা এখনও কি আমরা স্মরণ করিব না? এত দিন কি তবে কুহকীর মন্ত্রের ন্যায় তাহাদের কথাগুলা শুনিয়াছিলাম? তাঁহারা কি বলেন নাই?—এই জগৎ, একটি অখণ্ড শাসনতন্ত্রের অধীন, একই উপাদানে নির্ম্মিত; সুতরাং ইহার একটা নির্দ্দিষ্ট কালচক্র—একটা নির্দ্দিষ্ট কল্পকাল অবশ্যই থাকিবে; কতকগুলি পদার্থ চলিয়া যাইবে, আর কতকগুলি পদার্থ তাহার স্থান অধিকার করিবে;—কতকগুলির তিরোভাব ও কতকগুলির আবির্ভাব হইবে; কতকগুলি অচলভাবে ও