পাতা:এপিক্‌টেটসের উপদেশ - জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৬৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৫৪
এপিক্‌টেটসের উপদেশ।

 ৬। “কিন্তু আমার মা যে আমাকে না দেখিলে কাঁদেন”। এই সকল উপদেশ-বাক্য তিনি কি তবে কখন শুনেন নাই? তুমি তবে তাঁহাকে বুঝাইতে চেষ্টা কর। তা ছাড়া তুমি আর কি করিতে পার। পরের দুঃখ নিবারণ করা সম্পূর্ণরূপে আমাদের আয়ত্তাধীন নহে। কিন্তু আমার নিজের দুঃখ নিবারণ করা সম্পূর্ণরূপে আমার সাধ্যায়ত্ত। কোন অনিবার্য্য প্রাকৃতিক ঘটনার জন্য বিলাপ করিলে ঈশ্বরের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করা হইবে; তাহা হইলে দিবা রাত্রে আমার মনের শান্তি থাকিবে না। গভীর রজনীতে, যদি কোন সংবাদ আইসে, যদি কাহারও নিকট হইতে পত্র আইসে, অমনি আমি শয্যা হইতে লাফাইয়া উঠি এবং না জানি কি সংবাদ এই মনে করিয়া কাঁপিতে থাকি। “রোম হইতে একজন পত্রবাহক আসিয়াছে”—“যদি কোন অশুভ সংবাদ হয়।” তোমার কি অশুভ হইতে পারে যখন তুমি সেখানে নাই। “গ্রীস হইতে একটা পত্র আসিয়াছে,”—“কোন অশুভ সংবাদ নহে ত?”—এইরূপ সকল স্থানই তোমার পক্ষে অমঙ্গলের প্রস্রবণ হইয়া উঠে। যেখানে তুমি রহিয়াছ, সেখানকার অশুভই কি তোমার পক্ষে যথেষ্ট নহে? সমুদ্রপারেও কি তোমার নিস্তার নাই?—পত্রাদিতেও কি তোমার নিস্তার নাই? তুমি তবে কোথায় গিয়া নিরাপদ হইবে? “আমার যে সকল আত্মীর বন্ধু বিদেশে আছেন, তাঁহাদের যদি মৃত্যু হয়, তাহা হইলে কি হইবে?”—বিধাতার অখণ্ডনীয় নিয়মে যে সকল জীব মৃত্যুর অধীন—তাহাদের মৃত্যু এক সময়ে অবশ্যই হইবে। তুমি তাহাতে কি করিবে? তুমি তবে দীর্ঘজীবি হইতে কেন ইচ্ছা কর? অধিক দিন বাঁচিলে কোন-না-কোন প্রিয়জনের মৃত্যু কি তোমায় দেখিতে হইবে না? তুমি কি জান না, দীর্ঘকালের মধ্যে কত কি ঘটিতে পারে?—কেহ বা জ্বর রোগে, কেহ বা দসুর হস্তে, কেহ বা রাজার উৎপীড়নে