পাতা:এপিক্‌টেটসের উপদেশ - জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৬৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
এক্‌লা থাকা?
৫৯

জন্মগ্রহণ করে একাকীই মৃত হয়। দেখ না কেন-ঈশ্বর নিজেই নিজের সঙ্গী; একাকীই জগৎশাসনে ব্যাপৃত, একাকীই স্বকীয় মহৎ সঙ্কল্পের ধ্যানে নিমগ্ন। এইরূপ আমিও যদি আমার নিজের সঙ্গে কথোপকথন করিতে পারি, অন্য সংসর্গের অভাব অনুভব না করি, আপনার মধ্যেই আত্মবিনোদনের উপায় সংগ্রহ করিয়া রাখি, আত্মপর্য্যাপ্ত হই; ঈশ্বরের জগৎশাসন কিরূপ ভাবে চলিতেছে,—বাহ্য বস্তুর সহিত আমার কিরূপ সম্বন্ধ, আমার পূর্ব্ব-অবস্থা কিরূপ ছিল, এখনকার বর্ত্তমান অবস্থাই বা কিরূপ, কোন্ কোন্ বিষয় এখনও আমাকে ক্লেশ দিতেছে, কিরূপে এই সমস্ত দুঃখক্লেশ বিদূরিত অথবা উপশমিত হইতে পারে, অবস্থা-অনুসারে কোন্ কোন্ বিষয়ে আপনার উৎকর্ষ সাধন করিতে পারি,—এই সমস্ত বিষয়ের আলোচনায় যদি আমি ব্যাপৃত থাকি তাহা হইলে আমাকে আর এক্‌লা থাকিতে হয় না।

 ২। আমরা ভাবি,—রাজা আমাদিগকে শান্তি প্রদান করিয়াছেন। এখন কোন যুদ্ধবিগ্রহ নাই; দস্যু তস্করের ভয় নাই, এখন দেশের একপ্রান্ত হইতে অপর প্রান্ত পর্য্যন্ত, সকল সময়েই নিরাপদে ভ্রমণ করিতে পারি। এ সমস্তই সত্য; কিন্তু রাজা কি জ্ববরোগ হইতে, নৌকাডুবি হইতে, অগ্ন্যুৎপাত হইতে, ভূমিকম্প হইতে, বজ্র বিদ্যুৎ হইতে, অথবা পঞ্চবাণ হইতে আমাদিগকে নিষ্কৃতি দিতে পারেন?—অথবা দুঃখ শোক হইতে, ঈর্ষা হইতে আমাদিগকে মুক্তি দিতে পারেন? —কখনই না। ইহার কোনোটি হইতেই তিনি আমাদিগকে রক্ষা করিতে পারেন না। কিন্তু তত্ত্বজ্ঞানীরা বলেন, তাঁহাদের কথা শুনিয়া চলিলে, এই সকল দুঃখ ক্লেশের মধ্যেও শান্তি লাভ করা যায়। তত্ত্বজ্ঞানের আশ্বাস বাণীটি কি তাহা শোন:—“যদি তোমরা আমার বাক্যে কর্ণপাত কর,—“হে মনুষ্যগণ! যেখানেই তোমরা থাক না কেন,