পাতা:এপিক্‌টেটসের উপদেশ - জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৭৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিষয়-সুখ ও আত্মপ্রসাদ।
৬৫

উদ্দেশে মৃত্তিকা খনন করি, কিংবা কর্ষণ করি, তখন কি এই বলিয়া তাহার গুণগান করিব না যে, “মহান্ সেই ঈশ্বর যিনি ভূমিকর্ষণের জন্য আমাদিগকে এই সব যন্ত্র দিয়াছেন; মহান্ সেই ঈশ্বর যিনি আমাদিগকে হস্ত দিয়াছেন, উদর দিয়াছেন, খাদ্য দিয়াছেন, যিনি আমাদের অজ্ঞাতসারে শস্য বর্দ্ধিত করিতেছেন, এবং নিদ্রাকালে আমাদের নিশ্বাস প্রশ্বাস নিয়মিত করিতেছেন? তিনি যে আমাদিগকে তাঁহার বিশ্বরচনা আলোচনা করিবার শক্তি দিয়াছেন, কোন্ পথে চলিতে হইবে আমাদিগকে জানাইয়া দিয়াছেন,—ইহার জন্য তাঁহার মহিমা কীর্ত্তন করা কি মনুষ্যমাত্রেরই কর্ত্তব্য নহে?

 তোমাদের মধ্যে অধিকাংশ লোকই অন্ধ;—তোমাদের মধ্যে কি তবে একজনও নাই যে এই স্থান অধিকার করে?—সকলের হইয়া তাঁহার মহিমা কীর্ত্তন করে? আমি বৃদ্ধ, আমি খঞ্জ,—ঈশ্বরের গুণগান ভিন্ন আমি আর কি করিতে পারি? আমি যদি কোকিল হইতাম, কোকিলেরা যাহা করে, আমি তাহাই করিতাম। আমি যদি রাজহংস হইতাম,—রাজহংসেরা যাহা করে, আমি তাহাই করিতাম। কিন্তু আমি যে জ্ঞান-বুদ্ধিসম্পন্ন জীব,—আমার কর্ত্তব্য ঈশ্বরের মহিমা কীর্ত্তন করা। এই আমার জীবনের নির্দ্দিষ্ট কাজ; ইহাই আমি চিরকাল করিব, এ কাজ আমি কখনও ছাড়িব না; যতদিন থাকে দেহে প্রাণ, করিব তাঁরই নাম গান; এবং এই নাম-গানে তোমাদিগকেও আমি আহ্বান করিতেছি।

বিষয়-সুখ ও আত্মপ্রসাদ।

 কোন বিষয়-সুখ তোমার সম্মুখে উপস্থিত হইলে, সতর্ক হইয়া তাহা হইতে আপনাকে সতত রক্ষা করিবে। তাহা-দ্বারা নীয়মান হইবে না।