পাতা:এরাও মানুষ - নৃপেন্দ্রকৃষ্ণ চট্টোপাধ্যায় (১৯৫০).pdf/১০২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

সব পুরানো রীতি-নীতির কথা শুনে ঠাট্টা করে।

 অল্প বয়সে ছেলে-ছোকরার দল এমনি ধারা ঠাট্টা তো করবেই। আজ বুড়োলোকদের তারা মানতে চায় না। বুড়োদের বিদ্যে-বুদ্ধির তারিফ করে না। কোন কিছু বিচার করে ভেবে দেখতেও চায় না। ছেলে-ছোকরার দল ভাবে যে হাসলেই বুঝি সব যুক্তি উড়ে চলে গেল।

 কিন্তু পুরানো রীতি-নীতি এত হাল্কা জিনিস নয়। শত শত বৎসর ধরে শত শত বৃদ্ধের বিচার-বুদ্ধির ফলে, অভিজ্ঞতার ফলে এই সব আচার-নীতি গড়ে উঠেছে। সমস্ত জাতের অভিজ্ঞতা এই সব পুরানো রীতি-নীতির মধ্যে তিল তিল করে জড়ো হয়েছে। হেসে উড়িয়ে দিলেই হলো?

 এই যে আটদিন ধরে মৃতদেহকে গাছের সঙ্গে প্রকাশ্যে সকলের দেখবার জন্যে রাখা হয়, শাদা লোকগুলো এই রীতির ওপর ভারী চটা। তারা জানে না, কেন মৃতদেহকে এইভাবে এতদিন রাখা হয়। দূর দূরান্ত বনের ভেতর, দূর গাঁয়ের যে-সব লোক আছে, তাদের আসতে তো সময় লাগে! তাদের সকলের তো আসা চাই! টম্-টম্ বাজিয়ে তাদের সকলকে খবর দিতেও তো সময় লাগে!

 তা ছাড়া, সেকালের জ্ঞানী লোকেরা দেখেছে, অনেক সময় যাকে মনে হয়েছে মৃত বলে, আসলে সে কিন্তু তখনও মরেনি। হয়ত গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন হয়ে পড়েছিল মাত্র। তারা দেখেছে,

৯৭

  বা—৭