পাতা:এরাও মানুষ - নৃপেন্দ্রকৃষ্ণ চট্টোপাধ্যায় (১৯৫০).pdf/১১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

তা থেকে তাদের সম্বন্ধে আমাদের ধারণা হয়েছে যে, তারা আফ্রিকার বুনো হিংস্র পশুদের মতনই দ্বিপদ জন্তু বিশেষ। তাদের ধর্ম নেই, ধর্মবোধ নেই, হৃদয় নেই, হৃদয়াবেগ নেই, কোন রসবোধ বা সৌন্দর্য-অনুভূতি নেই, অসভ্য বর্বর ও হিংস্র এক জাতের প্রাণী, যারা শুধু জন্মেছে শ্বেতাঙ্গ সভ্যতার ভার বইবার জন্যে···প্রাণহীন ক্রীতদাসের জাত। শ্বেতাঙ্গ মনিবেরা তাদের সেইভাবেই দেখেছে, সেইভাবেই ব্যবহার করেছে এবং জগতে তাদের সেইভাবেই পরিচয় দিয়েছে। এই আদিম প্রাণবন্ত জাতির মধ্যে প্রকৃতি, হৃদয়, মন ও মস্তিষ্কের যে বিরাট সম্ভাবনা সঞ্চয় করে রেখেছে, একদিন না একদিন তার স্ফুরণ হবেই, কৃষ্ণচর্ম বলে তার আড়ালে মানবীয় সম্ভাবনার কিছু নেই, এই বিরাট মিথ্যা অচিরকালের মধ্যেই বিনষ্ট হয়ে যাবে। আজ এই মুহূর্তে চির-অজ্ঞাত কালো কাফ্রি আর নিগ্রোদের মধ্যে যে সব প্রতিভা জন্মগ্রহণ করছেন, বিশেষ করে হৃদয়-ধর্মের যেটি সবচেয়ে সূক্ষ্মতম প্রকাশ, সেই সঙ্গীতের মধ্যে, সাহিত্যের মধ্যে যেসব প্রতিভা জেগে উঠছে, জগৎ-প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রে তাঁরা সগৌরবে শ্বেতাঙ্গ সমকক্ষদের সমান কৃতিত্ব অর্জন করছেন, এবং কোন কোন ক্ষেত্রে তাঁদের ছাড়িয়েও উঠছেন।

 বাতোয়ালা সেই অবজ্ঞাত মানব-জাতিরই মানসিক কাহিনী। এই কাহিনী লেখবার জন্যে রেনে মাঁরা পাশ্চাত্য সভ্যতা থেকে বিদায় নিয়ে সুদীর্ঘকাল এই কৃষ্ণকায় জাতিদের মধ্যে তাদেরই