পাতা:এরাও মানুষ - নৃপেন্দ্রকৃষ্ণ চট্টোপাধ্যায় (১৯৫০).pdf/১৪২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

বলছো, তাদের আমি বেশ ভাল করেই চিনি···তারা হলো মিথ্যাবাদী। তাদের পুরাণ হলো মিথ্যার ঝুড়ি। অবিশ্বাস্য।

 শুরু হয়ে যায়, দুজনার তুমুল তর্ক।

 বাতোয়ালা আর বিসিবিংগুই, দুজনেই অন্তরের আসল কথা চাপা দিয়ে, জাতির পুরাণের গল্প নিয়ে বচসা করতে শুরু করে দেয়। বাতোয়ালা দেখাতে চায়, যেহেতু সে সর্দার, সেহেতু জাতির পুরাণ ব্যাখ্যা করবার অধিকার তারই বেশী এবং তার পিতার কাছ থেকে বংশ-পরম্পরায় সে এইসব জ্ঞান অর্জন করেছে। এইসব জ্ঞান বাইরে থেকে পাবার কোন উপায় নেই। প্রত্যেক বংশের কর্তার কাছে এই জ্ঞান থাকে। তার মৃত্যুর পর তার উত্তরাধিকারী তার জমি-জমার সঙ্গে সঙ্গে এইসব জ্ঞানেরও উত্তরাধিকার পেয়ে থাকে। সেইজন্যে তাদের মধ্যে বংশ মর্যাদার এতখানি মূল্য।

 বিসিবিংগুই জানে সে আজ এসে পড়েছে বাতোয়ালার ফাঁদের মধ্যে। তাকে হত্যা করে প্রতিশোধ নেবার যে বাসনা বাতোয়ালার মনে জেগেছে, বাইরে তার কোন লক্ষণ পরিস্ফুট হয়ে না উঠলেও, বিসিবিংগুই জানে, সে-প্রতিশোধের-বহ্নি বাতোয়ালার অন্তরে তেমনি জ্বলছে। তাদের মনে একবার যে জিঘাংসা জাগে, রক্ত না দেখার আগে তা আর প্রশমিত হয় না! বাতোয়ালার কাহিনী সে অন্যমনস্কভাবে শুনে চলে কিন্তু তার মনের ভেতর একটি কথাই শুধু বড় হয়ে থাকে, আজ রাত্রির

১৩৭