পাতা:এরাও মানুষ - নৃপেন্দ্রকৃষ্ণ চট্টোপাধ্যায় (১৯৫০).pdf/১৪৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

 বাতোয়ালা আবার গল্প বলতে আরম্ভ করে। আকাশের গায়ে তখন অসংখ্য তারা ফুটে উঠেছে। সেইদিকে চেয়ে বাতোয়ালা বলে, এই যে আমার মাথার ওপরে রূপোর টাকার মতন অসংখ্য “আম্‌বি রেপি” জ্বলছে···মনে হচ্ছে যেন অসংখ্য চোখ পিট্‌ পিট্‌ করছে, ওগুলো আসলে কি, তা জানো? ওগুলো আসলে হচ্ছে, আকাশের গায়ে অসংখ্য ছেঁদা, সেই সব ছেঁদা দিয়ে বৃষ্টির দিনে পৃথিবীতে বৃষ্টি পড়ে!

 প্রতিবাদ করতে গিয়ে বিসিবিংগুই আবার থেমে যায়। বাতোয়ালা নিজের জ্ঞান জাহির করবার জন্যে বলতে আরম্ভ করে, আমাদের পূর্ব-পুরুষরা জানতেন কি করে বৃষ্টিকে ডেকে আনতে পারা যায়! বিশেষ করে চাষ-বাসের মাসে, যে বছরে বৃষ্টি হতো না সে বছরে তাঁরা মন্তর পড়ে আকাশ থেকে বৃষ্টি টেনে আনতেন। মাঠের ওপর একটা মাটির সরায় মুঠো মুঠো নুন রেখে তারা আম্‌বি রেপিদের মন্তর পড়ে নেমন্তন্ন করতো। সেই মন্তর-পড়া নুনের লোভে দেখতে দেখতে আকাশ থেকে বৃষ্টি ঝরে পড়তো।আজকাল আমরা সে-সব মন্ত্র ভুলে গিয়েছি। এই সব নোংরা শাদালোকগুলোর সংস্পর্শে এসে আমরা আমাদের পুরানো সব বিদ্যা ভুলে যাচ্ছি। এই বিসিবিংগুই-এর মতন যারা আজকালকার ছোকরা, তারা নিজেদের জাতের ধর্ম-কর্ম ভুলে শাদা লোকদের অনুকরণ করতে ছুটছে···সমস্ত জাতটাকে মেরে ফেলছে···

১৪০