শিকারীর দল। রোদে ঝিক্মিক্ করে ওঠে কোমরের ছোরা।
ইয়াহো! তৈরী হয়েছে বন···হয়েছে সময়···এইবার শিকারের পেছনে যে-পারে সে ছুটবে···সমস্ত অরণ্য এখন মুক্ত শিকারীদের জন্যে···যার হাতের বর্শায় আছে জোর···শিকার তার।
দেখতে দেখতে সমস্ত বনকে ঘিরে কুণ্ডলী পাকিয়ে ওঠে ধোঁয়া···ধোঁয়ার রঙ একটু একটু করে হয়ে আসে ফিকে···তারপর লক্ লক্ করে হাজার জিহ্বায় জ্বলে ওঠে দাবানল···সমস্ত বনকে ঘিরে জ্বলে ওঠে অগ্নি-বলয়···সে-অগ্নির আতঙ্কে পশুরা বিবর ছেড়ে ছুটতে আরম্ভ করে···দগ্ধ হয়ে যায় সাপেরা···ঝোপের অন্ধকার থেকে বেরিয়ে পড়ে শাবকদের নিয়ে সিংহিনী···পুড়ে ছাই হয়ে যায় লতা-গুল্ম, তৃণ-কণ্টক।
এই আগুন না হলে হয় না শিকারের উৎসব। শিকারকে উপলক্ষ্য করে অরণ্যকে দগ্ধ করার মধ্যে শুধু যে পশুদের আতঙ্কিত করাই উদ্দেশ্য, তা নয়; এর সঙ্গে সংযুক্ত আদিম অরণ্যবাসীদের জীবন-যাত্রা-চক্র। এইভাবে অরণ্যকে দগ্ধ করে আগুন মাটিকে করে উর্বর, দগ্ধ লতা-গুল্মের ভস্মে মাটি পায় তার প্রয়োজনীয় আহার্য। শিকারের উৎসবের পরেই আসে জমি-চযার উৎসব। দগ্ধ মাটির ওপর চলে হলকর্ষণ। জন্মায় শস্য। এইভাবে শিকারের এই বার্ষিক উৎসবের সঙ্গে গাঁথা তাদের জীবন-যাত্রা-চক্র।
১৪৬