পাতা:এরাও মানুষ - নৃপেন্দ্রকৃষ্ণ চট্টোপাধ্যায় (১৯৫০).pdf/১৫৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

 সহসা এক প্রান্ত থেকে উঠে বিকট উল্লাস, ইয়া হো···ইয়া···

 বর্শার ফলকে লুটিয়ে পড়েছে প্রথম শিকার···মাটিতে, পড়েছে প্রথম ঝলক রক্ত! জমে ওঠে উৎসব। মাটিতে রক্ত, গাছের গায়ে রক্ত, ঝোপে রক্ত, পা ভিজে যায় আহত পশুর রক্তে। দীর্ণ পশুর বুক থেকে ফিন্‌কী দিয়ে গায়ে লাগে লোনা গরম রক্ত। ইয়া হো···ইয়া···রক্ত-মাখা মাটিতে শুরু হয় রক্তের নাচ···শিকার হলো রক্তের নাচের উৎসব! তীব্র সুরার মতন শিরায় উপশিরায় রক্ত জাগিয়ে তোলে উন্মাদ নেশা···হত্যা হয়ে যায় খেলা, মৃত্যু হয়ে যায় নাচের ছন্দ।

 রক্ত আর শব্দের নেশায় হঠাৎ বিসিবিংগুই-এর মধ্যে জাগে, বহু যুগ আগেকার ভুলে-যাওয়া ঘটনার মত, বাতোয়ালার কথা। ইয়াসীগুইন্দজা···সে আর ইয়াসীগুইন্দজা···আর বাতোয়ালা!

 হ্যাঁ, বাতোয়ালা! কাল রাত্রিতে সে বেড়িয়েছিল শিকারে···বাতোয়ালাকে হত্যা করবার জন্যে। সে জানে, কাল সারারাত বাতোয়ালাও মনে মনে তাকেই শিকার করে বেড়িয়েছে। কে থাকবে? সে আর ইয়াসীগুইন্দজা? না, বাতোয়ালা আর ইয়াসীগুইন্দজা?

 এমন সময় ঠিক তার মাথার ওপর দিয়ে একলক্ষ মৌমাছির মতন শব্দ করতে করতে ছুটে চলে গেল একফালি একটা আলো···ঝক্‌ঝকে একটা বর্শা!

১৪৮