নিরুদ্বেগে নাক ডাকিয়ে চলেছে। পাশেই একটা উনুন, তারই মতন তারও নিভে গিয়েছে আগুন।
কি চমৎকার সুখেই না সে ঘুমুচ্ছে! ঘুমের মধ্যে কখনো কখনো পেট থেকে হাত তুলে স্তনের ওপর রাখছে...ভেঙ্গে-পড়া, শীর্ণ স্তন, শুকনো তামাক পাতার মতন। কখনো বা ঘুমের মধ্যে দীর্ঘশ্বাস ফেলার সঙ্গে গা-টা একটু চুলকে নিচ্ছে। ঠোঁট দুটো হঠাৎ নড়ে ওঠে এক-একবার। গা এলিয়ে দেয়। তারপর আবার সব স্থির হয়ে আসে, আবার নাক ডাকতে থাকে।
ঘরের এক ধারে একটা গর্ত্তের ভেতর কতকগুলো রবারের চুবড়ী জমা হয়ে পড়ে আছে। তার ওপর বসে ঝিমোচ্ছে জুমা, ছাই-রঙা তার কুকুরটা... বিষণ্ণ ম্লান মুখ।
উপবাস-শীর্ণ তার ছোট্ট দেহের মধ্যে চোখে পড়ে শুধু তার লম্বা খাড়া ছুঁচালো কান দুটো, যেন তার ঘুমন্ত দেহের মধ্যে সব সময় সেই দুটো কানই জেগে আছে। হয়ত গায়ে মাছি উড়ে এসে বসলো কিম্বা কোন পোকা কামড়ালো, দেহটা ঝাড়া দিয়ে উৎপাতটাকে দূর করতে চেষ্টা করে। চোখ চেয়ে একবার দেখে নেয়, কাছেই তার মনিবাণী ইয়াসীগুইন্দজা শুয়ে আছে, তার মনিবের সবচেয়ে প্রিয় ইয়াসী, মনিবাণী যখন ঘুমুচ্ছে, তখন সে আর উঠবে কেন? সেইখানেই শুয়ে থাকে, নড়ে না একটুও। কখন বা, স্বপ্নের নিষ্ঠুর পরিহাসে বিচলিত হয়ে শূন্যে মুখ তুলে চীৎকার করতে থাকে···ঘরের নীরবতা আহত হয়ে ওঠে।
১৪