পাতা:এরাও মানুষ - নৃপেন্দ্রকৃষ্ণ চট্টোপাধ্যায় (১৯৫০).pdf/২৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

নিশ্চিন্তে বসে থাকা যায় না। সেই ছাগল–নাদির আবার ভাগীদার আছে, গোবুরে–পোকার দল। এত ঠাণ্ডায় কি তারা বেরিয়েছে? বোধহয় না। হঠাৎ কিসের আশায় জুমার বিষণ্ণ মুখে ঈষৎ হাসির রেখা ফুটে ওঠে। হয়ত ভোরবেলায় ঘুরতে ঘুরতে একটা–আধটা মুরগীর ডিমও জুটে যেতে পারে। না, না, এত আশা করা ঠিক নয়···

 জুমা উঠে বসে। জিভ দিয়ে পেট আর পায়ের চেটো ভাল করে চুষে, চেটে নেয়। তারপর ক্লান্ত শীর্ণ দেহ নিয়ে কোন রকমে হেলতে দুলতে দরজার কাছে গিয়ে দাঁড়ায়!

 এতদিনের অভিজ্ঞতায় সে শিখেছে কি করে মনের ভাব লুকিয়ে চলতে হয়। তাই দরজার কাছে এমন ভঙ্গী করে দাঁড়ায় যেন সীমাহীন ক্লান্তির অসহ্য জড়তা তাকে পেয়ে বসেছে। যদি সে একটু স্ফূ্র্তির আমেজ দেখায়, তাহলে এক্ষুণি হয়তো বাতোয়ালা তার পিছু নেবে। তখন কোন কিছু যোগাড়ের আর কোন আশা-ভরসাই থাকবে না। সেটি হলে চলবে না।

 বাতোয়ালাও ভাবছিল। একে একে হাঁসগুলো, ছাগলছানারা, মুরগীগুলো, সবশেষে জুমাও বেরিয়ে চলে গেল। তাদের অনুসরণ করাই তার উচিত। তা ছাড়া, লিঙ্গচ্ছেদের উৎসব সামনে রয়েছে। এখনো পর্যন্ত কাউকে নেমন্তন্ন করা হয় নি। আর সময় নেই, তাড়াতাড়ি সেটা সেরে ফেলতে হবে।

১৯