পাতা:এরাও মানুষ - নৃপেন্দ্রকৃষ্ণ চট্টোপাধ্যায় (১৯৫০).pdf/৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

বইখানি একটা নতুন সুর জাগিয়ে তোলে, ফরাসী-ভাষার অপূর্ব নমনীয়তার মধ্যে রেনে মারাঁ এক অপরূপ গদ্যভঙ্গীর সৃষ্টি করেন। অনুবাদে সেই ভঙ্গীটি যথাসাধ্য বাংলা ভাষায় আনবার চেষ্টা করেছি।

 ঊনবিংশ শতাব্দীর আগে পর্যন্ত আফ্রিকাকে যুরোপের লোকেরা ‘ডার্ক কণ্টিনেণ্ট' বলে জানতো। এই অজানা মহাদেশে কাঁচামাল, হীরে আর সোনার সন্ধান পেয়ে য়ুরোপের শক্তিশালী জাতিরা এই মহাদেশের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং নিজেদের মধ্যে এই বিরাট দেশকে ভাগ করে নেয়। ইংরাজ, ফরাসী, ইতালীয়ান, বেলজিয়ান—প্রত্যেক জাতের সভ্য মানুষ আফ্রিকাতে উপনিবেশ স্থাপন করে এবং সেখানকার নিরক্ষর দরিদ্র কৃষ্ণকায় লোকদের অসহায় নিরস্ত্রতার সুযোগ নিয়ে সেই সব উপনিবেশে সভ্যতার নামে যে শোষণ-শাসনের রাজত্ব সুরু করে, তার সংবাদ সাম্রাজ্যবাদী স্বার্থ-শাসিত জগতের সংবাদপত্রে অতি সযত্নে এবং সুকৌশলে চাপা দিয়ে রাখা হতো। যাদের ওপর অবাধে এই অত্যাচার চলতো, এই অত্যাচারের বেদনাকে প্রকাশ করবার মত কোন সুযোগ বা যোগ্য সাহিত্যিক তাদের ছিল না। নীরবে এই নির্মম অত্যাচার, কোন নিষ্ঠুর বিধাতার বিধান রূপে মেনে নেওয়া ছাড়া আর গত্যন্তর ছিল না।

 সৌভাগ্যবশত মানবপ্রেমিক সাহিত্যিকদের দুঃসাহসিকতার ফলে মহাদেশব্যাপী এই বিরাট অনাচারের সঙ্ঘবদ্ধ ষড়যন্ত্রের কথা