পাতা:এরাও মানুষ - নৃপেন্দ্রকৃষ্ণ চট্টোপাধ্যায় (১৯৫০).pdf/৯২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

 সঙ্গে সঙ্গে তুমুল শব্দে বেজে ওঠে বাজনা। বিদ্যুৎ-আহতের মতন নিমেষের মধ্যে জনতা ক্ষিপ্ত উন্মত্ত হয়ে ওঠে। পুরুষেরা ছুঁড়ে ফেলে দেয়, তাদের ক্ষীণ কটীবাস। মেয়েরা ছিঁড়ে ফেলে দেয় সামান্য লজ্জা-বস্ত্র। সমস্ত উৎসব-অঙ্গন এক সঙ্গে নেচে ওঠে। নাচতে নাচতে প্রত্যেকে বেছে নেয় তার সঙ্গী বা সঙ্গিনীকে। সমস্ত উৎসব-ক্ষেত্র টলমল করে ওঠে কামনার সেই উম্মাদ নৃত্যে।

 ইয়াসীগুইন্দজা আর তার নৃত্য-সঙ্গিনীকে কেন্দ্র করে, প্রত্যেক পুরুষ তার নৃত্য-সঙ্গিনীকে বেছে নেয়, জোড়ায় জোড়ায় তারা নাচতে শুরু করে।

 সুরা আর ঘন-সান্নিধ্যের গন্ধে বাতাস উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। চারদিক থেকে কানে আসে অস্ফুট চীৎকার, আক্রান্তের আর্তনাদ, দেহ-পীড়িতের মধুর প্রতিবাদ···

 প্রকাশ্যে, সকলের সামনে, অরণ্যের বন্য পশুর মতন বাধা-বন্ধহারা প্রচণ্ড উল্লাসে তারা মেতে ওঠে, অরণ্য পশুর মতন সংস্কারবিহীন মুক্ত। কামনার মদিরকে দ্বিগুণিত করে তোলে ফেনিল সুরার পাত্র···

 ক্রমশ বাজনা থেমে আসে। যন্ত্রীর দল তাদের বাজনা দিয়ে যে উন্মত্ত আকাঙ্খাকে জাগিয়ে তুলেছিল, উত্তুঙ্গ করে তুলেছিল, তাতে তাদেরও ন্যায্য অংশ গ্রহণ করবার জন্যে বাজনাকে ফেলে দিয়ে এগিয়ে আসে। যদিও অন্য সব দলের মতন তেমন নিপুণ-

৮৭