পাতা:এরাও মানুষ - নৃপেন্দ্রকৃষ্ণ চট্টোপাধ্যায় (১৯৫০).pdf/৯৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

প্রথম প্রহর···ঘন কুয়াসার মধ্যে ডেকে উঠছে দু'একটা পাখী···

 একদিন ভোজ, সারা বছর উপবাস। রৌদ্র-শুষ্ক বসন্ত দিনের পর আসে বর্ষার ভিজে দিন···উল্লাসের সর-সঙ্গীতের পর আসে কান্নার সুর···হাসির পর আসে অশ্রু।

 উৎসব যখন পুরো মাত্রায় চলেছিল, বাতোয়ালার বৃদ্ধ পিতা তখন অতিরিক্ত সুরা পানে উৎসব প্রাঙ্গনেই ঘুমিয়ে পড়েছিল, সেই ঘুমের ভেতর দিয়ে বৃদ্ধ তখন যাত্রা করে চলেছিল, নিবিড় ঘন-অন্ধকার লতা-গুল্মের ভেতর দিয়ে সেই দূরতম গাঁয়ে যেখান থেকে আজও পর্যন্ত কেউ আর ফিরে আসতে পারে নি। তার চারপাশে তখন চলেছিল উন্মাদ-নৃত্য। কেউ দেখেনি, বৃদ্ধ চিরকালের মতন ঘুমিয়ে পড়েছিল।

 মদের পেয়ালায় মৃত্যু! এর চেয়ে সুখের মরণ আর কি হতে পারে! শেষ মুহূর্তের অনুশোচনা, অন্তিমের অসহায় বিলাপ আর বেদনা, সমস্ত ঢাকা পড়ে যায় ফেনিল নেশায়। ঘুম থেকে মৃত্যু, শুধু একটা ছোট্ট ধাপ। কোন চেষ্টা নেই, কোন পরিশ্রম নেই, কোন যাতনা নেই। শুধু অন্ধকার ছায়ায় নিঃশব্দে আর একটু গড়িয়ে যাওয়া। ভাববার কিছু থাকে না। মধুর মরণ! সারা জীবনের ক্লান্তির শেষে বিশ্রাম নাঙ্গাকৌরার বিশাল স্বর্গ-রাজ্যের একপ্রান্তে এক ধারে কোথাও বিশ্রাম···চির বিশ্রাম।

 সেখানে কোন মশার উৎপাত নেই, কোন পোকার কামড়

৯৩