পাতা:ঐতিহাসিক চিত্র (প্রথম বর্ষ) - নিখিলনাথ রায়.pdf/৩২৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

জগৎশেঠ । ৩১৩ সেনাপতি অতুল উৎসাহের সহিত যুদ্ধ করিয়া বিশেষরূপ কৃতকাৰ্য্য হইতে পারেন নাই। মুর্শিদকুলী খ্যার কৰ্ম্মচারী মীরহাবিব এই সময়ে নবাব সৈন্য মধ্যে ছিল, সে আহত হইয়া মহারাষ্ট্রীয়দের হস্তে বন্দী হয়, এবং পরে তাহাদের কাৰ্য্যে নিযুক্ত হইয়াছিল । সেনাপতিগণের উৎসাহে নবাব সৈন্যগণ যুদ্ধ পরিত্যাগ করে নাই সত্য, কিন্তু অনাহারে অনিদ্রায় পথকষ্টে ও রণক্লেশে তাহারা জীৰ্ণ শীর্ণ কঙ্কালাবশেষ হইয়া উঠিয়ছিল । তাহদের মধ্যে খাদ্যদ্রব্যের যারপর নাই অভাব ঘটিয়াছিল। একদিবস আলিবর্দি খ্যার অন্যতম প্ৰধান সেনাপতি মস্তাফা খাঁ কতকগুলি মহারাষ্ট্রীয়কে পরাজিত করিয়া তাহদেৱ কতকগুলি খাদ্যদ্রব্য অধিকার করায় সৈন্যেরা তাহা মহানন্দে ভোজন করিয়াছিল। এইরূপে কয়েক দিবস যুদ্ধ চলিয়াছিল। একদিন মহারাষ্ট্ৰীয়েরা প্ৰায় নবাবের সম্মুখে আসিয়া উপস্থিত হয় । তাহার নিকট দুইটা প্ৰকাণ্ড হস্তী । থাকায়, তাহারা এরূপভাবে আপনাদের শৃঙ্খল ঘুরাইতে আরম্ভ করে যে, মহারাষ্ট্ৰীয়েরা আর নবাবের নিকট অগ্রসর হইতে পারে নাই । সেই দিবস উক্ত হস্তীদ্বয়ের জন্য নবাবের প্রাণরক্ষা হইয়াছিল, এইরূপে নানারূপ কষ্টভোগ করিয়া কয়েক দিবস পরে নবাব সৈন্যগণ কাটোয়ায় উপস্থিত হয় । নবাবসৈন্যের কাটোয়ায় উপস্থিতির পূৰ্ব্বে মহারাষ্ট্ৰীয়েরা তথায় উপস্থিত হইয়া তথাকার সমস্ত খাদ্যদ্রব্য অগ্নিসংযোগে দগ্ধ করিয়া ফেলে । নবাব সৈন্যগণ সেই দগ্ধাবিশিষ্ট তণ্ডুল প্ৰভৃতি ভোজন করিয়া কোনরূপে জীবন রক্ষা করিতে সমর্থ হয় । এই ভীষণ আক্রমণে নবাব সৈন্যগণের যারপরনাই শোচনীয় অবস্থা ঘাঁটিয়াছিল। অবিশ্রান্ত যুদ্ধে তাহাদের মধ্যে খাদ্যদ্রব্যের অভাব হইয়া পড়ে। যে গ্রামে তাহারা উপস্থিত হয়, মহারাষ্ট্রীয়রা পুৰ্ব্বে তথায় উপস্থিত হইয়া সমস্ত শস্য অগ্নি সংযোগে ভস্মস্তৃপে পরিণত করত। পরিশেষে নবাব সৈন্য মধ্যে খাদ্যদ্রব্যের এরূপ অভাব ঘটে যে, তাহাদিগকে বৃক্ষপত্র, বল্কল, কীট, পতঙ্গ প্ৰভৃতি ভোজন করিয়া উদরপূৰ্ত্তি করিতে হইয়াছিল। মৃত জন্তুর মাংস পাইলে পরস্পরে কড়াকড়ি করিয়া কলহ আরম্ভ করিত, রাত্ৰিতে কেহ নিদ্রা যাইবার অবকাশ পাইত না । ক্রমাগত রাত্ৰিজাগরণে তাহাদের শরীর, অত্যন্ত