পাতা:ঐতিহাসিক চিত্র (প্রথম বর্ষ) - নিখিলনাথ রায়.pdf/৩৮০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ঐতিহাসিক চিত্র। সংখ্যক হস্তী, অশ্ব, লোক লস্কর ও নানাবিধ খাদ্য সামগ্ৰী সমভিব্যাহারে গৌড় হইতে বহির্গত হইয়া দামোদর ও আমোদর নদদ্বয় মধ্যবর্তী বনভূমিতে আসিয়া উপস্থিত হইলেন, এবং মজুরদ্বারা জঙ্গল কাটাইয়া এখানে একটী নগর স্থাপন করিয়া খাঁ জাহান নিজ নামানুসারে তাহার নাম জাহানাবাদ রাখিলেন। জাহানাবাদ সংস্থাপনের পরে রাজস্ব বন্দোবস্ত ও অন্যান্য আবশ্যকীয় সংস্করণ সৌকর্য্যাৰ্থ তাঁহাকে পূর্ব বঙ্গে বাকুলাচন্দ্ৰদ্বীপ অঞ্চলে যাইতে হইয়াছিল। চন্দ্র দ্বীপের কাৰ্য্য সমাপন করিয়া ক্ৰমে তিনি ভৈরব নদের দক্ষিণ তীরবর্তী সুন্দরবনে আসিয়া উপস্থিত হন। এখানে এক দিন রাত্রিকালে তিনি স্বপ্ন দেখিলেন যেন স্বয়ং আল্লা আসিয়া তাহাকে আশীৰ্ব্বাদ করিয়া সৎকাৰ্য্য করিতে অনুমতি করিতেছেন। এই স্বপ্নের পর হইতেই খাঁ জাহানের মন ধৰ্ম্মভাবে পরিপূর্ণ হইয়া উঠিল । তিনি সৎকাৰ্য্য করিতে বন্ধপরিকর হইলেন। এ স্থান তখন ভীষণ জঙ্গলে পরিপূর্ণ ছিল। খাঁ জাহান আলি মজুর দ্বারা ঝাড়ি জঙ্গল কৰ্ত্তন, কর্ষণ দ্বারা পতিত ভূমি উৰ্ব্বারা করিয়া নবাব সাহেবের আনুকূল্যে স্থপতিগণ দ্বারা সুরম্য হৰ্ম্ম ও মসজিদনিৰ্ম্মাণ, বড় বড় জলাশয়খনন ও পথ ঘাট প্ৰস্তুত করাইয়া সেই ভীষণ জঙ্গলকে সুদৃশ্য স্থানে পরিণত করিলেন এবং এখানে বাস করিতে লাগিলেন। এখানে থাকিয়াই তিনি বহুল অর্থ উপাৰ্জন করেন । খাঁ জাহান আলির সর্বপ্ৰধান কীৰ্ত্তি “ষাটগম্বুজ” নামক বৃহৎ মসজিদ। লোকে ইহাকে “ষাটগম্বুজ” নামে অভিহিত করিলেও ইহাতে সর্বসমেত ৭৭টীি গম্বুজ আছে। ৬০টা থাম দশ সারিতে বিভক্ত হইয়া এই মসজিদের ছাদ রক্ষা করিতেছে। ষাট গম্বুজ পূৰ্ব্বদুয়ারী। মসজিদের সম্মুখভাগে ১১টী দরজা আছে। মধ্যস্থলের দরজাটা প্ৰকাণ্ড কিন্তু উভয় পার্শ্বস্থিত ১০টী অপেক্ষাকৃত ছোট। দ্বিতীয় ও দশম দরজা দুইটী ইটের গাথিনী দ্বারা এক ধারে বন্ধ করা । প্ৰত্যেক দরজার উপরেই খিলানের কাজ। মসজিদের পশ্চাদভাগের দেওয়ালেও সম্মুখভাগের অনুরূপ সমসংখ্যক দরজা ও সমানভাবের খিলানের কাজ আছে। উত্তর ও দক্ষিণ প্ৰত্যেক দিকেই ৭টা করিয়া দরজা আছে, এগুলির উপরেও একই ভাবের খিলানের কাজ। মসজিদের ৪ কোণে চারিটী বুরুজ ছাদের