পাতা:ঐতিহাসিক চিত্র (প্রথম বর্ষ) - নিখিলনাথ রায়.pdf/৫৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

R ঐতিহাসিক চিত্ৰ । পাদলগ্ন যে স্থান এক্ষণে সুমধুর ফল বৃক্ষের ছায়ায় স্নিগ্ধ হইয়া আফগান বীর ও রমণীর পদতাড়ন অকাতরে সাহা করিতেছে, একদিন সেই স্থান হিন্দু ও বৌদ্ধ নরনারীর লীলাভূমি ছিল, এবং এককালে উহা গ্ৰীক বীরগণেরও আবাসভূমি হইয়া উঠিয়াছিল। আজিও হিন্দুকুশ তাহার প্রাচীন অধিবাসীর নাম স্মরণ করাইয়া দিতেছে। আজিও কান্দাহার, কাবুল, গান্ধার ও কাম্বোজের স্মৃতি মনোমধ্যে জাগাইয়া তুলে। আজিও তথাকার সৌরাষ্ট্র, গুপ্ত, রাজপুত ও কান্যকুব্জ মুদ্র হিন্দু প্ৰাধান্যের কথা মনে করাইয়া দেয়। এখনও তাহার অনেক স্থান হিন্দুর নিকট তীর্থ বলিরা গণ্য, এবং এখনও তাহার অনেক স্থানে হিন্দু, বৌদ্ধের প্রাচীন কীৰ্ত্তি ধরণীগর্ভে লীন হইয়াও তাহাদিগের নিৰ্ম্মাতৃগণের অস্পষ্ট ছায়া মানসচক্ষের সমক্ষে আনিয়া দিতেছে। তাই বলিতেছি প্ৰকৃতির যে রম্যাকানন এক্ষণে আফগান নরনারীর সাধের আবাসভূমি, এককালে তাহ হিন্দুদিগকেও স্নিগ্ধচ্ছায়ায় ঢাকিয়া রাখিত, ও সুমধুর ফলরসে তাহাদের তৃষ্ণাতুর কণ্ঠকে সরস করিয়া অপূৰ্ব আনন্দ উপভোগ করাইত। ফলতঃ অনেক দিন পৰ্য্যন্ত আফগানিস্থান হিন্দুরাজগণের অধীন ছিল। মহাভারত ও বৌদ্ধযুগের পরও অনেক দিন আফগানিস্থানে হিন্দুরাজগণ রাজত্ব করিতেন। মধ্যে উহা গ্ৰীকবীর আলেকজাণ্ডার কর্তৃক বিজিত হইলে সেলুকাস প্রভৃতি গ্ৰীক বীরগণ ইহার শাসনদণ্ড গ্ৰহণ করিয়াছিলেন। পরে পুনৰ্ব্বার তথায় হিন্দুরাজত্ব প্রচলিত হয়। যে সময়ে চীন পরিব্রাজক হিউয়েন সিয়াঙ্গ ভারতের নানাস্থানে পরিভ্রমণে রত হন, সে সময়ে তিনি কাবুলেও উপস্থিত হইয়াছিলেন। তৎকালে কাবুলে হিন্দু ও তুর্ক রাজা ছিল বলিয়া তিনি উল্লেখ করিয়াছেন। ইহার পর হইতে কাবুল মুসল্মানগণ কর্তৃক আক্রান্ত হইতে আরব্ধ হয়। খলিফা মুয়াবিয়ার রাজত্ব কালে ৬৬১ খৃঃ অব্দ হইতে ৬৮০ খৃঃ অব্দের মধ্যে কাবুল প্রথম মুসল্মানগণ কর্তৃক আক্রান্ত হয়। মুয়াবিয়া আবদর রহমান নামে একজন সেনানীকে কাবুলজয়ের জন্য প্রেরণ করিয়াছিলেন। কিন্তু তাহার তদানীন্তন সাহসী ও কাৰ্য্যদক্ষ হিন্দু রাজা আপনার স্বধৰ্ম্মাবলম্বিগণকে সমবেত করিয়া মুহাম্মানদিগকে বিতাড়িত