পাতা:ঐতিহাসিক চিত্র (প্রথম বর্ষ) - নিখিলনাথ রায়.pdf/৭১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

জগৎশেঠ যৎকালে ভারতবর্ষে শাক্যসিংহের প্রচারিত বৌদ্ধধৰ্ম্ম দিন দিন হীনপ্ৰভ হইতে লাগিল, সেই সময়ে জৈনধৰ্ম্ম ক্ৰমে ক্ৰমে আপনার প্রসার-বৃদ্ধি করিতে আরম্ভ করে। বৌদ্ধধৰ্ম্মের নীতিমালার উপরই ইহার ভিত্তি সংস্থাপিত হয়, কিন্তু অন্যান্য উপকরণ মিশ্রিত হওয়ায় তাহার ভিত্তি তাদৃশ সুদৃঢ় হইতে পারে নাই। সেই জন্য ইহা কেবলই ভারতবর্ষে আবদ্ধ হইয়া থাকে, ভারতচু্যতীত অন্য । কোন দেশে ইহার স্থান হয় নাই। জৈনধৰ্ম্মের সৃষ্টিকৰ্ত্তার নাম অহৎ ; ইনি দক্ষিণ কর্ণাটনিবাসী ও বেঙ্কট গিরির অধীশ্বর ছিলেন। অহৎ নৃপতি ঋষভদেবের চরিত্র আদর্শ করিয়া তাহার ন্যায় ধৰ্ম্মপরায়ণ হইবার জন্য উদাসীনবেশে ধৰ্ম্মপ্রচারে প্রবৃত্ত হন। হিন্দুদিগের মতে ঋষভদেব ভগবান বিষ্ণুর অংশাবতার। জৈনেরা তঁহাকে প্ৰথম অহঁৎ বলিয়া ব্যক্তি করিয়া থাকেন। জৈনগণ পরমেশ্বরের অস্তিত্ব অস্বীকার করেন না, তাহাদের মতে অহৎই পরমেশ্বর। ইহাদের পরমেশ্বর সর্বজ্ঞ, রাগদ্বেষাদি সমস্ত দোষজয়ী, ত্ৰিলোকমান্য ও সত্যবাদী । জৈনমতে ধৰ্ম্মই একমাত্র মুক্তির পথ। ধৰ্ম্ম দ্বারা বন্ধক্ষয় হইলে জীব মুক্ত হয়, অর্থাৎ স্বভাবপ্রাপ্ত হইয়া থাকে। মুক্তির স্বরূপ সত্যত উদ্ধগমন । এই মতে দুইটি মাত্ৰ মূলতত্ত্ব জীব ও অজীব, তন্মধ্যে বোধস্বরূপ জীব ও অবোধাত্মক অর্জীব। কোন কোন সম্প্রদায়ের মতে জীবাজীবেরও ভেদ আছে,—জীব দ্বিবিধ, সংসারী ও মুক্ত। অমনস্ক, ধৰ্ম্মাধৰ্ম্ম, পুদগল (শরীর), অস্তিকায় ( তত্ত্ব ) প্রভৃতি ভেদে অজীব বহুবিধ। সম্যক দর্শন, সম্যক জ্ঞান ও সম্যক চরিত্র এই তিনটি মোক্ষের পথ। জৈনেরা এই তিনটিকে রত্নত্ৰয় নামে অভিহিত করিয়া থাকেন। - জৈন মতে ধৰ্ম্মাধৰ্ম্ম জীবের বিবিধ পরিণামের কারণ। বৌদ্ধদিগের ন্যায় জৈনেরাও অহিংসাকে পরম ধৰ্ম্ম বলিয়া মনে করিয়া থাকেন। জৈনদিগের যে সমস্ত নীতি প্রচলিত আছে তন্মধ্যে কতিপয় প্রধান নীতির উল্লেখ করা शाश८ङCछ । যেখানে গুণবান লোক, সত্য, শৌচ, প্রতিষ্ঠা, গুণগৌরব, এবং যেখানে বাস করিলে অপূর্ব জ্ঞানলাভের সম্ভাবনা সেই স্থানেই বাস করা কীৰ্ত্তব্য। - a উত্তম ব্যক্তিরা জীৰ্ণ কি মলিন বস্ত্র পরিধান করিবেন না।