পাতা:কথা-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.djvu/২২

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
কথা
১৭

লক্ষ লক্ষ হাতে। দিগন্তরে যায় দেখা
অতি দূর তট প্রান্তে নীল বনরেখা;—
অন্য দিকে লুব্ধ ক্ষুব্ধ হিংস্র বারিরাশি
প্রশান্ত সূর্যাস্ত পানে উঠিছে উচ্ছ্বাসি
উদ্ধত বিদ্রোহভরে। নাহি মানে হাল,
ঘুরে টলমল তরী অশান্ত মাতাল
মূঢ়সম। তীব্র শীতপবনের সনে
মিশিয়া ত্রাসের হিম নরনারীগণে
কাঁপাইছে থরহরি। কেহ হতবাক্‌,
কেহ বা ক্রন্দন করে ছাড়ি ঊর্ধ্ব ডাক,
ডাকি আত্মজনে। মৈত্র শুষ্ক পাংশুমুখে
চক্ষু মুদি’ করে জপ। জননীর বুকে
রাখাল লুকায়ে মুখ কাঁপিছে নীরবে।
তখন বিপন্ন মাঝি ডাকি কহে সবে-
“বাবারে দিয়েছে ফাঁকি তোমাদের কেউ,
যা মেনেছে দেয় নাই তাই এত ঢেউ,
অসময়ে এ তুফান! শুন এই বেলা,
করহ মানৎ রক্ষা করিয়ো না খেলা,
ক্রুদ্ধ দেবতার সনে।”—যার যত ছিল
অর্থ বস্ত্র যাহা কিছু জলে ফেলি দিল
না করি বিচার। তবু তখনি পলকে
তরীতে উঠিল জল দারুণ ঝলকে