পাতা:কথা-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.djvu/৪২

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
কথা
৩৭

বন্দীরে বাচায়ে রেখো এ মিনতি করি।—
রাখিব তোমার কথা,—কহিল প্রহরী।
দ্বিতীয় রাত্রির শেষে খুলি বন্দীশালা
রমণী পশিল কক্ষে, হাতে দীপ জ্বালা,
লোহার শৃঙ্খলে বাঁধা যেথা বজ্রসেন—
মৃত্যুর প্রভাত চেয়ে মৌনী জপিছেন
ইষ্টনাম। রমণীর কটাক্ষ-ইঙ্গিতে
রক্ষী আসি খুলি দিল শৃঙ্খল চকিতে।
বিস্ময়-বিহ্বল নেত্রে বন্দী নিরখিল
সেই শুভ্র সুকোমল কমল-উন্মীল
অপরূপ মুখ। কহিল গদ্‌গদ স্বরে—
“বিকারের বিভীষিকারজনীর পরে
করধৃত শুকতারা শুভ্রউষাসম
কে তুমি উদিলে আসি কারাকক্ষে মম—
মুমূর্ষুর প্রাণরূপা, মুক্তিরূপা অয়ি
নিষ্ঠুর নগরী মাঝে লক্ষ্মী দয়াময়ী।”
“আমি দয়াময়ী!” রমণীর উচ্চহাসে
চকিতে উঠিল জাগি নব ভয়ত্রাসে
ভয়ংকর কারাগার। হাসিতে হাসিতে
উন্মত্ত উৎকট হাস্য শোকাশ্রুরাশিতে
শতধা পড়িল ভাঙি। কাদিয়া কহিলা—
এ পুরীর পথমাঝে যত আছে শিলা