পাতা:কথা - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২২
কথা

“হেথায় আগমন কিসের কাজে?”
 নৃপতি শুধাইল হেসে।
“কোশলরাজ আমি, বন ভবন”
 কহিলা বনবাসী ধীরে,—
“আমার ধরা পেলে যা দিবে পণ
 দেহ তা মাের সাথীটিরে।”
উঠিল চমকিয়া সভার লােকে,
 নীরব হল গৃহতল,
বর্ম্ম-আবরিত দ্বারীর চোখে
 অশ্রু করে ছলছল।
মৌন রহি রাজা ক্ষণেক তরে
 হাসিয়া কহে—“ওহে বন্দী,
মরিয়া হবে জয়ী আমার পরে
 এমনি করিয়াছ ফন্দী!
তােমার সে আশায় হানিব বাজ,
 জিনিব আজিকার রণে,
রাজ্য ফিরি দিব, হে মহারাজ,
 হৃদয় দিব তারি সনে।”
জীর্ণ-চীর-পরা বনবাসীরে
 বসাল নৃপ রাজাসনে,
মুকুট তুলি দিল মলিন শিরে,
 ধন্য কহে পুরজনে।

২১শে কার্তিক, ১৩০৪