পাতা:কথা - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩২
কথা

দস্যুহস্তে খােয়াইয়া নিঃস্বরিক্ত শেষে
ফিরিয়া চলিতেছিল আপনার দেশে
নিরাশ্বাসে। তাহারে ধরিল চোর বলি’;
হস্তে পদে বাঁধি তার লােহার শিকল
লইয়া চলিল বন্দীশালে।

    সেইক্ষণে
সুন্দরী-প্রধানা শ্যামা বসি বাতায়নে
প্রহর যাপিতেছিল আলস্যে কৌতুকে
পথের প্রবাহ হেরি’;—নয়নসম্মুখে
স্বপ্নসম লােকযাত্রা। সহসা শিহরি’
কাঁপিয়া কহিল শ্যামা,—আহা মরি মরি
মহেন্দ্রনিন্দিত কান্তি উন্নতদর্শন
কারে বন্দী করে আনে চোরের মতন
কঠিন শৃঙ্খলে! শীঘ্র যা’লো সহচরী
বলগে নগরপালে মাের নাম করি-
শ্যামা ডাকিতেছে তারে; বন্দী সাথে লয়ে
একবার আসে যেন এ ক্ষুদ্র আলয়ে
দয়া করি'।—শ্যামার নামের মন্ত্রগুণে
উতলা নগররক্ষী আমন্ত্রণ শুনে
রােমাঞ্চিত; সত্বর পশিল গৃহমাঝে
পিছে বন্দী বসেন নতশির লাজে
আরক্ত কপােল। কহে রক্ষী হাস্যভরে—
অতিশয় অসময়ে অভাজনপরে