পাতা:কথা - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৮৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
কথা
৮১

নদীতীরে। পাথর-ছড়ানো উপকূলে,
বরষার জলধারা সহস্র আঙুলে
কেটে গেছে রক্তবর্ণ মাটি। সারি সারি
উঠেছে বিশাল শাল,—তলায় তাহারি
ঠেলাঠেলি ভিড় করে শিশু তরুদল
আকাশের অংশ পেতে। নদী হাঁটুজল
ফটিকের মত স্বচ্ছ –চলে একধারে
গেরুয়া বালির কিনারায়। নদীপারে
ইসারা করিল গুরু—পাঠান দাঁড়াল।
নিবে-আসা দিবসের দগ্ধ রাঙা আলো
বাদুড়ের পাখাসম দীর্ঘ ছায়া জুড়ি
পশ্চিম প্রান্তর পারে চলেছিল উড়ি
নিঃশব্দ আকাশে। গুরু কহিলা পাঠানে—
মামুদ হেথায় এস, খোঁড় এইখানে।—
উঠিল সে বালু খুঁড়ি একখণ্ড শিলা
অঙ্কিত লােহিত রাগে। গােবিন্দ কহিলা
পাষাণে এই যে রাঙা দাগ, এ তােমার
আপন বাপের রক্ত। এইখানে তার
মুণ্ড ফেলেছিনু কেটে, না শুধিয়া ঋণ,
না দিয়া সময়। আজ আসিয়াছে দিন,
রে পাঠান, পিতার সুপুত্র হও যদি
খোল তলবার,—পিতৃঘাতকেরে বধি
উষ্ণ রক্ত উপহারে করিবে তর্পণ
তৃষাতুর প্রেতাত্মার।বাঘের মতন