পঞ্চম পরিচ্ছেদ।
আত্মমন্দিরে।
জনম অবধি হম রূপ নিহারনু নয়ন না তিরপিত ভেল।
সোই মধুর বোল শ্রবণহি শুননু শ্রুতিপথে পরশ না গেল॥
কত মধু যামিনী রভসে গোয়াইনু না বুঝনু কৈছন না কেল।
লাখ লাখ যুগ হিয়ে হিয়ে রাখনু তবু হিয়া জুড়ন না গেল॥
যত যত রসিক জন রসে অনুগমন অনুভব কাহু না দেখ।
বিদ্যাপতি কহে প্রাণ জুড়াইতে লাখে না মিলল এক॥
লুতফ্-উন্নিসা আলয়ে আসিয়া প্রফুল্ল-বদনে পেষ্মন্কে ডাকিয়া বেশভূষা পরিত্যাগ করিলেন। সুবর্ণ মুক্তাদি খচিত বসন পরিত্যাগ করিয়া পেষ্মনকে কহিলেন যে “এই পোষাকটি তুমি লও।”
শুনিয়া পেষ্মন্ কিছু বিস্ময়াপন্না হইলেন। পোষাকটি বহুমূল্যে সম্প্রতি মাত্র প্রস্তুত হইয়া ছিল। কহিলেন, “পোষাক আমায় কেন? আজিকার কি সম্বাদ?”
লুৎফ্-উন্নিসা কহিলেন, “শুভ সম্বাদ বটে।”
পে। “তা ত বুঝিতে পারিতেছি। মেহের-উন্নিসার ভয় কি ঘুচিয়াছে?”
লু। “ঘুচিয়াছে। এক্ষণে সে বিষয়ের কোন চিন্তা নাই।” পেষ্মন্ অত্যন্ত আহ্লাদ প্রকাশ করিয়া কহিলেন, “তবে এক্ষণে বেগমের দাসী হইলাম।”
লু। “যদি তুমি বেগমের দাসী হইতে চাও, তবে আমি মেহের-উন্নিসাকে বলিয়া দিব।”