পাতা:কপালকুণ্ডলা (দ্বিতীয় সংস্করণ).pdf/১১৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
গ্রন্থ খণ্ডারম্ভে।
১১৩

পৃথক্ করিয়া অঙ্কিত করে, শেষে তৎসমুদয় পরস্পর সংলগ্ন করিয়া ছায়ালোকভিন্নতা লিখে। আমরা এ পর্য্যন্ত এই মানসচিত্রের অঙ্গ প্রত্যঙ্গ পৃথক্ পৃথক্ রেখাঙ্কিত করিয়াছি; এক্ষণে তৎসমুদায় পরস্পর সংলগ্ন করিয়া তাহার ছায়ালোক সন্নিবেশ করিব।

 রবিকরাকৃষ্ট বারিবাষ্পে মেঘের জন্ম। দিন দিন, তিল তিল করিয়া, মেঘ সঞ্চারের আয়োজন হইতে থাকে তখন মেঘ কাহারও লক্ষ্য হয় না; কেহ মেঘ মনে করে না; শেষে অকস্মাৎ একেবারে পৃথিবী ছায়ান্ধকারময়ী করিয়া বজ্রপাত করে। যে মেঘে অকস্মাৎ কপালকুণ্ডলার জীবনযাত্রা গাহমান হইল, আমরা এত দিন তিল তিল করিয়া তাহার বারিবাষ্প সঞ্চয় করিতেছিলাম।

 পাঠক মহাশয় “অদৃষ্ট” স্বীকার করেন? ললাটলিপির কথা বলিতেছি না, সে ত অলস ব্যক্তির আত্মপ্রবোধ জন্য কল্পিত গল্পমাত্র। কিন্তু, কখন কখন যে, কোন ভবিষ্যৎ ঘটনার জন্য পূর্ব্বাবধি এরূপ আয়োজন হইয়া আইসে, তৎসিদ্ধিসূচক কার্য্য সকল এরূপ দুর্দ্দমনীয় বলে সম্পন্ন হয়, যে মানুষিক শক্তি তাহার নিবারণে অসমর্থ হয়, ইহা তিনি স্বীকার করেন কি না? সর্ব্বদেশে সর্ব্বকালে দূরদর্শিগণ কর্ত্তৃক ইহা স্বীকৃত হইয়াছে। এই অদৃষ্ট যুনানী নাটকাবলির প্রাণ, সর্ব্বজ্ঞ সেক্‌স্‌পীয়রের মাক্‌বেথের আধার; ওয়ালটর্ স্কটের “ব্রাইড্ অব্ লেমার মুরে” ইহার ছায়াপাত হইয়াছে; গেটে প্রভৃতি জর্ম্মান কবিগুৰুগণ ইহার স্পষ্টতঃ সমালোচনা করিয়া-