পাতা:কপালকুণ্ডলা (দ্বিতীয় সংস্করণ).pdf/১৫২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৪৬
কপালকুণ্ডলা।

নিরপরাধিনী বালিকার মৃত্যু সাধন করি। আমি তাহাতে সম্মতি দিলাম না। এই সময়ে তুমি তথায় উপস্থিত হইয়াছিলে। বোধ করি কিছু শুনিয়া থাকিবে।”

 কপা। “আমি ঐরূপ বিতর্কই শুনিয়াছিলাম।”

 লু। “সে ব্যক্তি আমাকে অবোধ অজ্ঞান বিবেচনা করিয়া কিছু উপদেশ দিতে চাহিল। শেষ টা কি দাঁড়ায় ইহা জানিয়া তোমায় উচিত সম্বাদ দিব বলিয়া তোমাকে বনমধ্যে অন্তরালে রাখিয়া গেলাম।”

 কপা। “তার পর আর ফিরিয়া আসিলে না কেন?”

 লু।” তিনি অনেক কথা বলিলেন, বাহুল্য বৃত্তান্ত শুনিতে শুনিতে বিলম্ব হইল। তুমি সে ব্যক্তিকে বিশেষ জান। কে সে অনুভব করিতে পারিতেছ?”

 কপা। “আমার পূর্ব্বপালক কাপালিক।”

 লু। “সেই বটে। কাপালিক প্রথমে তোমাকে সমুদ্র তীরে প্রাপ্তি, তথায় প্রতিপালন, নবকুমারের আগমন, তৎসহিত তোমার পলায়ন, এ সমুদায় পরিচয় দিলেন। তোমাদিগের পলায়নের পর যাহা যাহা হইয়াছিল, তাহাও বিবরিত করিলেন—সে সকল বৃত্তান্ত তুমি জান না। তাহা তোমার গোচরার্থ বিস্তারিত বলিতেছি।”

 এই বলিয়া লুৎফ্-উন্নিসা কাপালিকের শিখরচ্যুতি, হস্তভঙ্গ, স্বপ্ন, সকল বলিলেন। স্বপ্ন শুনিয়া কপালকুণ্ডলা চমকিয়া, শিহরিয়া উঠিলেন—চিত্তমধ্যে বিদ্যুচ্চঞ্চলা হইলেন। লুৎফ্-উন্নিসা বলিতে লাগিলেন,