পাতা:কপালকুণ্ডলা (দ্বিতীয় সংস্করণ).pdf/৪১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আশ্রয়ে।
৩৫

শ্রবণেন্দ্রিয় আনিলেন। এবং দুই চারি কথায় নিজ সঙ্গীর অবস্থা বুঝাইয়া দিলেন। অধিকারী বহু ক্ষণ পর্য্যন্ত করতললগ্নশীর্ষ হইয়া চিন্তা করিতে লাগিলেন। পরিশেষে কহিলেন “এ বড় বিষম ব্যাপার। মহাপুৰুষ মনে করিলে সকল করিতে পারেন। যাহা হউক মায়ের প্রসাদে তোমার অমঙ্গল ঘটিবে না। সে ব্যক্তি কোথায়?”

 কপালকুণ্ডলা, “আইস” বলিয়া নবকুমারকে আহ্বান করিলেন। নবকুমার অন্তরালে দাঁড়াইয়াছিলেন, আহূত হইয়া গৃহ মধ্যে প্রবেশ করিলেন। অধিকারী তাঁহাকে কহিলেন, “আজি এই খানে লুকাইয়া থাক, কালি প্রত্যূষে তোমাকে মেদিনীপুরের পথে রাখিয়া আসিব।”

 ক্রমে কথায় কথায় অধিকারী জানিতে পারিলেন যে এপর্য্যন্ত নবকুমারের আহারাদি হয় নাই। ইহাতে অধিকারী তাঁহার আহারের আয়োজন করিতে প্রবৃত্ত হইলে, নবকুমার আহারে নিতান্ত অস্বীকৃত হইয়া কেবল মাত্র বিশ্রামস্থানের প্রার্থনা জানাইলেন। অধিকারী নিজ রন্ধনশালায় নবকুমারের শয্যা প্রস্তুত করিয়া দিলেন। নবকুমার শয়ন করিলে, কপালকুণ্ডলা সমুদ্রতীরে প্রত্যাগমন করিবার উদ্‍যোগ করিলেন। অধিকারী তাঁহার প্রতি সস্নেহ নয়নে দৃষ্টিপাত করিয়া কহিলেন।

 “যাইও না, ক্ষণেক দাঁড়াও, এক ভিক্ষা আছে।”

 কপালকুণ্ডলা। “কি?”

 অধিকারী। “তোমাকে দেখিয়া পর্য্যন্ত মা বলিয়া থাকি, দেবীর পাদ স্পর্শ করিয়া শপথ করিতে পারি, যে