পাতা:কপালকুণ্ডলা (দ্বিতীয় সংস্করণ).pdf/৪৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪০
কপালকুণ্ডলা।

শাহ বিধিমতে যত্ন পাইতে লাগিলেন। যখন রামগোবিন্দ ঘোষাল উড়িষ্যা হইতে প্রত্যাগমন করেন, তখন মোগল পাঠানের যুদ্ধ আরম্ভ হইয়াছে। আগমন কালে তিনি পথিমধ্যে পাঠান সেনার হস্তে পতিত হয়েন। পাঠানেরা তৎকালে ভদ্রাভদ্রবিচারশূন্য; তাহারা নিরপরাধী পথিকের প্রতি অর্থের জন্য বল প্রকাশের চেষ্টা করিতে লাগিল। রামগোবিন্দ কিছু উগ্রস্বভাব; পাঠানদিগের কটু কহিতে লাগিলেন। ইহার ফল এই হইল যে, সপরিবারে অবৰুদ্ধ হইলেন; পরিশেষে জাতীয় ধর্ম্ম বিসর্জ্জন পূর্ব্বক সপরিবারে মুসলমান হইয়া নিষ্কৃতি পাইলেন।

 রামগোবিন্দ ঘোষাল সপরিবারে প্রাণ লইয়া বাটী আসিলেন বটে, কিন্তু মুসলমান বলিয়া আত্মীয় জনসমাজে এককালীন পরিত্যক্ত হইলেন। এ সময় নবকুমারের পিতা বর্ত্তমান ছিলেন, তাঁহাকে সুতরাং জাতিভ্রষ্ট বৈবাহিকের সহিত জাতিভ্রষ্টা পুত্রবধূকে ত্যাগ করিতে হইল। আর নবকুমারের সহিত তাঁহার স্ত্রীর সাক্ষাৎ হইল না।

 স্বজনত্যক্ত ও সমাজচ্যুত হইয়া রামগোবিন্দ ঘোষাল অধিক দিন স্বদেশে বাস করিতে পারিলেন না। এই কারণেও বটে, এবং রাজপ্রসাদে উচ্চপদস্থ হইবার আকাঙ্ক্ষায়ও বটে, তিনি সপরিবারে রাজপাট ঢাকানগরে গিয়া বসতি করিতে লাগিলেন। ধর্ম্মান্তর গ্রহণ করিয়া তিনি সপরিবারে মহম্মদীয় নাম ধারণ করিয়াছিলেন। ঢাকায় যাওয়ার পরে শ্বশুরের বা বনিতার কি অবস্থা