পাতা:কপালকুণ্ডলা (দ্বিতীয় সংস্করণ).pdf/৫৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দেবনিকেতনে।
৪৭

কারী মেদিনীপুরের পথ পর্য্যন্ত তাঁহাদিগের রাখিয়া আসিবেন।

 যাত্রাকালে কপালকুণ্ডলা কালী প্রণামার্থ গেলেন। ভক্তিভাবে প্রণাম করিয়া, পুষ্পপাত্র হইতে একটা অভিন্ন বিল্বপত্র প্রতিমার পাদোপরি স্থাপিত করিয়া তৎপ্রতি নিরীক্ষণ করিয়া রহিলেন। পত্রটী পড়িয়া গেল।

 কপালকুণ্ডলা নিতান্ত ভক্তিপরায়ণা। বিল্বদল প্রতিমাচরণচ্যুত হইল দেখিয়া ভীতা হইলেন;—এবং অধিকারীকে সম্বাদ দিলেন। অধিকারীও বিষণ্ণ হইলেন। কহিলেন,

 “এখন নিৰুপায়। এখন পতিমাত্র তোমার ধর্ম্ম। পতি শ্মশানে গেলে তোমাকে সঙ্গে সঙ্গে যাইতে হইবে। অতএব নিঃশব্দে চল।”

 সকলে নিঃশব্দে চলিলেন। অনেক বেলা হইলে মেদিনীপুরের পথে আসিয়া উপস্থিত হইলেন। তখন অধিকারী বিদায় হইলেন। কপালকুণ্ডলা কাঁদিতে লাগিলেন। পৃথিবীতে যে জন তাঁহার একমাত্র সুহৃৎ সে বিদায় হইতেছে।

 অধিকারীও কাঁদিতে লাগিলেন। চক্ষের জল মুছিয়া কপালকুণ্ডলার কাণে কাণে কহিলেন, “মা! তুই জানিস পরমেশ্বরীর প্রসাদে তোর সন্তানের অর্থের অভাব নাই। হিজলীর ছোট বড় সকলেই তাঁহার পূজা দেয়। তোর কাপড়ে যাহা বাঁধিয়া দিয়াছি তাহা তোর স্বামীর নিকট