পাতা:কপালকুণ্ডলা (দ্বিতীয় সংস্করণ).pdf/৫৮

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
৫২
কপালকুণ্ডলা।

 ব্যঙ্গ শুনিয়া নবকুমার ঈষৎ প্রসন্ন হইলেন। জিজ্ঞাসিলেন “কি হইয়াছে?”

 উত্তরকারিণী কহিলেন, “দস্যুতে আমার পালকি ভাঙ্গিয়া দিয়াছে, আমার এক জন বাহককে মারিয়া ফেলিয়াছে; আর সকলে পলাইয়া গিয়াছে। দস্যুরা আমার অঙ্গের অলঙ্কার সকল লইয়া আমাকে পাল্‌কিতে বান্ধিয়া রাখিয়া গিয়াছে।”

 নবকুমার অন্ধকারে অনুধাবন করিয়া দেখিলেন, যথার্থই একটী স্ত্রলোক শিবিকাতে বস্ত্র দ্বারা দৃঢ়তর বন্ধনযুক্ত আছে। নবকুমার শীঘ্রহস্তে তাহার বন্ধন মোচন করিয়া কহিলেন, “তুমি উঠিতে পারিবে কি?” স্ত্রীলোক কহিল, “আমাকেও এক ঘা লাঠি লাগিয়াছিল; এজন্য পায়ে বেদনা আছে; কিন্তু বোধ হয় অল্প সাহায্য করিলে উঠিতে পারিব।”

 নবকুমার হস্ত বাড়াইয়া দিলেন। রমণী তৎ‍সাহায্যে গাত্রোত্থান করিলেন। নবকুমার জিজ্ঞাসা করিলেন, “চলিতে পারিবে কি?”

 স্ত্রীলোক উত্তর না করিয়া জিজ্ঞাসা করিলেন, “আপনার পশ্চাতে কেহ পথিক আসিতেছে দেখিয়াছেন?”

 নবকুমার কহিলেন “না।”

 স্ত্রীলোক পুনরপি জিজ্ঞাসা করিলেন, “চটী কত দূর?”

 নবকুমার কহিলেন “কত দূর বলিতে পারি না—কিন্তু বোধ হয় নিকট।”

 স্ত্রীলোক কহিল, “অন্ধকারে একাকিনী মাঠে বসিয়া