পাতা:কপালকুণ্ডলা (দ্বিতীয় সংস্করণ).pdf/৫৯

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
রাজপথে।
৫৩

কি করিব, আপনার সঙ্গে চটী পর্য্যন্ত যাওয়াই উচিত। বোধ হয়, কোন কিছুর উপর ভর করিতে পারিলে, চলিতে পারিব।”

 নবকুমার কহিলেন, “বিপৎকালে সঙ্কোচ মূঢ়ের কাজ। আমার কাঁধে ভর করিয়া চল।”

 স্ত্রীলোকটী মূঢ়ের কার্য্য করিল না। নবকুমারের স্কন্ধেই ভর করিয়া চলিল।”

 যথার্থই চটী নিকটে ছিল। এ সকল কালে চটীর নিকটেও দুষ্ক্রিয়া করিতে দস্যুরা সঙ্কোচ করিত না। অনধিক বিলম্বে নবকুমার সমভিব্যাহারিণীকে লইয়া তথায় উপনীত হইলেন।

 নবকুমার দেখিলেন যে ঐ চটীতেই কপালকুণ্ডলা অবস্থিতি করিতেছিলেন। তাঁহার দাস দাসী তজ্জন্য এক খানা ঘর নিযুক্ত করিয়াছিল। নবকুমার স্বীয় সঙ্গিনীর জন্য তৎপার্শ্ববর্ত্তী এক খানা ঘর নিযুক্ত করিয়া তাঁহাকে তন্মধ্যে প্রবেশ করাইলেন। তাঁহার আজ্ঞামত গৃহস্বামীর বনিতা প্রদীপ জ্বালিয়া আনিল। যখন দীপরশ্মিস্রোতঃ তাঁহার সঙ্গিনীর শরীরে পড়িল, তখন নবকুমার দেখিলেন যে ইনি অসামান্যা সুন্দরী। রূপরাশিতরঙ্গে, তাঁহার যৌবনশোভা, শ্রাবণের নদীর ন্যায় উছলিয়া পড়িতেছিল।