পাতা:কপালকুণ্ডলা (দ্বিতীয় সংস্করণ).pdf/৮৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৭৮
কপালকুণ্ডলা।

যুক্ত সময়ে তাঁহার পাটরাণী হইবেন ইহা তাঁহার স্থির প্রতিজ্ঞা হইল। কেবল লুৎফ্-উন্নিসার স্থিরপ্রতিজ্ঞা এমত নহে, রাজপুরবাসী সকলেরই ইহা সম্ভব বোধ হইল। এইরূপ আশার স্বপ্নে লুৎফ্-উন্নিসা জীবন বাহিত করিতে ছিলেন, এমত সময়ে নিদ্রা ভঙ্গ হইল। আকবর শাহের কোষাধ্যক্ষ (আক্‌তিমাদ-উদ্দৌলা) খাজা আয়াসের কন্যা মেহেরউন্নিসা যবনকুলে প্রধান সুন্দরী। এক দিন কোষাধ্যক্ষ রাজকুমার সেলিম ও অন্যান্য প্রধান ব্যক্তিকে নিমন্ত্রণ করিয়া গৃহে আনিলেন। সেই দিন মেহের-উন্নিসার সহিত সেলিমের সাক্ষাৎ হইল, এবং সেই দিন সেলিম মেহের-উন্নিসার নিকট চিত্ত রাখিয়া গেলেন। তাহার পর যাহা যাহা ঘটিয়াছিল, তাহা ইতিহাস পাঠক মাত্রেই অবগত আছেন। সের আফগান নামক একজন মহাবিক্রমশালী ওমরাহের সহিত কোষাধ্যক্ষের কন্যার সম্বন্ধ পূর্ব্বেই হইয়াছিল। সেলিম অনুরাগান্ধ হইয়া সে সম্বন্ধরহিত করিবার জন্য পিতার নিকট যাচমান হইলেন। নিরপেক্ষ পিতার নিকট কেবল তিরস্কৃত হইলেন মাত্র।সুতরাং সেলিমকে আপাততঃ নিরস্ত হইতে হইল। আপাততঃ নিরস্ত হইলেন বটে; কিন্তু আশা ছাড়িলেন না। শের আফগানের সহিত মেহের-উন্নিসার বিবাহ হইল। কিন্তু সেলিমের চিত্তবৃত্তি সকল লুৎফ্-উন্নিসার নখ দর্পণে ছিল;—তিনি নিশ্চিত বুঝিয়াছিলেন, শের আফগানের সহস্র প্রাণ থাকিলেও তাঁহার