পাতা:কপালকুণ্ডলা (দ্বিতীয় সংস্করণ).pdf/৯৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
প্রতিযোগিনী গৃহে।
৯১

আমার মন জানিবার জন্য বলিলে। কিন্তু তোমার নিকট আমার এই ভিক্ষা, আমি যে শের আফগানের বনিতা, আমি যে কায়মনোবাক্যে শের আফগানের দাসী—তাহা তুমি বিস্মৃত হইয়া কথা কহিও না।”

 লজ্জাহীনা মতি এ তিরস্কারে অপ্রতিভ হইলেন না। বরং আরও সুযোগ পাইলেন, কহিলেন, “তুমি যে পতিগতপ্রাণা তাহা আমি বিলক্ষণ জানি। সেই জন্যই ছলক্রমে একথা তোমার সমুখে পাড়িতে সাহস করিয়াছি। সেলিম যে এ পর্যন্ত তোমার সৌন্দর্য্যের মোহ ভুলিতে পারেন নাই, এই কথা বলা আমার উদ্দেশ্য। সাবধান থাকিও।”

 মে। এখন বুঝিলাম। কিন্তু কিসের আশঙ্কা?” মতি কিঞ্চিৎ ইতস্ততঃ করিয়া কহিলেন “বৈধব্যের আশঙ্কা।”

 এই কথা বলিয়া মতি মেহের-উন্নিসার মুখপানে তীক্ষ্ণ দৃষ্টি করিয়া রহিলেন, কিন্তু ভয় বা আহ্লাদের কোন চিহ্ন তথায় দেখিতে পাইলেন না। মেহের-উন্নিসা সদর্পে কহিলেন,

 “বৈধব্যের আশঙ্কা! শের আফগান আত্মরক্ষার অক্ষম নহে। বিশেষ আকবর বাদশাহের রাজ্যমধ্যে তাঁহার পুত্ত্রও বিনা দোষে পরপ্রাণ নষ্ট করিয়া নিস্তার পাইবেন না।”

 ম। “সত্য কথা, কিন্তু সম্প্রতিকার আগ্রার সম্বাদ এই যে, আকবর শাহ গত হইয়াছেন। সেলিম