পাতা:কবিকঙ্কণ চণ্ডী (প্রথম খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কবিকঙ্কণের নিজের পুথির বিবরণ Y NSB কবিকঙ্কণ মেদিনীপুরে আরীড়া ব্ৰাহ্মণভূমিতে যাইয়া শেষ জীবন অতিবাহিত করিয়াছিলেন, হতভাগ্য কবি আর মাতৃভূমিতে ফিরিবার সুবিধা পাইয়াছিলেন বলিয়া মনে হয় না । তবে তঁহার পুত্র শিবরাম উপযুক্ত বয়সে দামিন্যাতেই বসবাস করিয়াছিলেন ; তিনি বারিাখার নিকট হইতে ১৬ বিঘা জমি ব্ৰহ্মোত্তর পাইয়াছিলেন, এতদদ্বারা বোঝা যায় তিনি স্বদেশে সম্মানিত ব্যক্তি ছিলেন । স্বদেশ তড়িত কবি দামিন্যার দিকে তাহার কল্পনা-নেত্ৰ চিরদিনই আবদ্ধ করিয়া রাখিয়াছিলেন । সেই দেশের বৃষদত্তের দেউলটিকে তিনি কল্পনায় সাঝের আরতি দ্বারা অভিনন্দিত করিতেন, তথাকার রত্নানু নদের কথা মনে হইলে তিনি ব্যথিত হইতেন, এবং তথাকার প্রতিষ্ঠিত শিবের পাদোদক যখনই স্মরণ করিতেন, তখনই তাহা গঙ্গাজলের ন্যায় পবিত্ৰ মনে করিয়া শিশুকালের স্মৃতিতে আত্মহারা হইয়া যাইতেন। হৃষীকেশবাবু কবিকঙ্কণ-ভক্ত, কবির সাধের সেই দামিন্যা গ্রামের বাৰ্ত্তমান অবস্থা দেখিয়া তিনি দুঃখের সহিত লিখিয়াছেন—“কবির আদরের দামিন্যা, যাহার সুখ্যাতি কবির মুখে ধরে নাই, এখন স্বপ্ন মাত্র। সে সমৃদ্ধি নাই, সে সৌন্দৰ্য্য নাই, সে প্ৰাচুৰ্য্য নাই, সে তেজ নাই, সে ধৰ্ম্ম নাই, সে ‘গঙ্গাসাম সুনিৰ্ম্মল জল’ নাই, সে ‘রত্নানু' নদ নাই। আছে কেবল দামোদরের লাল জল, তাহা গ্রামটির চার দিক ও মধ্যস্থল প্লাবিত করিয়া ছুটিতেছে । গ্রামের লোককে বর্ষাকালে এঘর হইতে ওঘর ডোঙ্গার সাহায্যে যাইতে হয়।” বিশ্ববিদ্যালয়-প্রেসে দেওয়ার পর পুস্তকের তিন চার ফৰ্ম্মার পাঠ হৃষীকেশবাবুই দেখেন। তার পর হইতে চারু-বাবু এই পুস্তক-সম্পাদনে উঠিয়াপড়িয়া লাগিয়া গেলেন। চতুর্থ ফৰ্ম্ম হইতে সমস্ত ফৰ্ম্মার প্রািফ তিনিই দেখিয়াছেন, ছাপা পুস্তক হইতে পাঠান্তর সংগ্ৰহ করিয়াছেন, এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের পুথিশালায় যে তিন চারি খানি প্রাচীন পুথি আছে তাহার সঙ্গে পাঠ মিলাইয়াছেন । Ýዚ শ্ৰীযুক্ত হৃষীকেশ বসু মহাশয় লিখিয়াছেন, কবিকঙ্কণের আরাধ্যা সিংহবাহিনী মূৰ্ত্তি একটি জরাজীর্ণ মাটির কুঁড়ে ঘরে আছেন । সেই ঘরে কবির নিজের পুথিখানাও আছে। কবির বংশধরেরা সাধারণের সাহায্যে এই কঁড়ে ঘরটির সংস্কার হয়। কিনা, তজ্জন্য হৃষীকেশ বাবুকে চেষ্টা করিতে অনুরোধ