পাতা:কবিতাসংগ্রহ ১ - তপোধীর ভট্টাচার্য.pdf/১০২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

১৬

এই তো বিষাদ-সিন্ধু এই তো আজন্ম শ্লেষ
এই রাত্রির প্রণয়, এই খরার শাসন।
এই অনির্বচনীয়, এই তো সহজ পাঠ
এই ভ্রম, এই যাত্রাপথ

জলের রূপকে আর আগুন-প্রতীকে সব
মিশে যাচ্ছে দ্রুত
মাটির ভূমিকা কতটুকু, অন্ধজন
জানে কী কখনো?

আজ, খুলে দেখি ভাষার কোরক
কতদূর গেছে।
ক্ষয়, আঁধি, গোপন সন্ত্রাস!


১৭

খোলো। কথার বয়ন খোলো। মিশে যাক
স্বপ্নহীন ভাষ্যহীন
সন্ধ্যার আকাশে যা-কিছু রূপক যা-কিছু প্রতীক।
খোঁজো শান্ত উচ্চারণ।
খোললা গ্রন্থি। খোলো ছন্দলয়। কৃতির আবহে
আনো উৎসে-ফেরা মোহানার
গভীর বয়ন। প্রবাহে বিধুর এই দূরত্বের বোধ
মুছে দিয়ে খোলো শেষ প্রতিভাস


১৮

আদিম মাতা, তোমার লোল-জিহ্বা প্রতিদিন চেটে-পুটে
খাচ্ছে রক্তমজ্জামেধা, আমি কী প্রণত হব তার কাছে?
তুমি এই ভারত-গাথায় ক্রমাগত উগরে দিচ্ছ কালো রাত
আর তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে খধ্বলিয়ে উঠছে ব্রাত্য দিন
এই দিন-রাত্রি থেকে তোমার কমণ্ডলুতে ভরে নিচ্ছ বিষ
আদিম মাতা, তোমাকে নমস্কার আর স্বাগত জানিয়ে লিখছি।
মানুষ-জন্মের আজব বৃত্তান্ত, নতুন ভাবে শুরু করছি নিজের মাংসে
বৈরি-হওয়া হরিণীর কথা, তোমার কাছেই খুলে দিচ্ছি নিজের করোটি
আদিম মাতা, তোমার লোলজি খেয়ে নিক রক্তমজ্জামেধা

৯৮