পাতা:কবিতাসংগ্রহ ১ - তপোধীর ভট্টাচার্য.pdf/১১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

মেঘে-মেঘে বেলা হলো। ভাষা-শ্রমিক হিসেবে কথা-পুথিবীর নির্যাস নিঙড়ে নেওয়ার আকাঙ্ক্ষা নিয়ে গেছে পথ থেকে পথাত্তরে। জমি থেকে আকাশ আর আকাশ থেকে জমি পরিক্রমার সূত্রে গড়ে উঠেছে শব্দে সমর্পিত অনুভবপুঞ্জ। কখনও তার নাম কবিতা কখনও ছোটগল্প কখনও প্রবন্ধ।

 কথাপৃথিবীতে আলো আর অন্ধকার, বাচন আর নৈঃশব্দ্য কী অজস্র যুগলবন্দি লিখে যাচ্ছে তা বুঝতে চাই যখন, কবিতা জন্ম নেয়। সামাজিক ভব্যতা আর নিয়মের কোলাহলে ক্লান্তধ্বস্ত হয়ে যখন নির্জনে নিজের মুখোমুখি হতে চাই, কবিতাই তো সবচেয়ে বড়ো আশ্রয়। গত তিন দশকে এই আশ্রয়ের খোঁজেই জমে উঠেছে বেশ কিছু কবিতা।

 নিজের অগোছালো স্বভাবের জন্যে কবিতা-সংগ্রহ প্রকাশের ভাবনা এতদিন উদ্যমে রূপান্তরিত হয়নি। যাঁর একান্ত আগ্রহে, চেষ্টায়, তাগিদে এখন একটি স্বপ্ন বাস্তব হয়ে উঠছে- আমার সমস্ত ভেঙে তিনি দীর্ঘ হয়ে উঠছেন প্রতিদিন। কবিতার মতো তাকেও বারবার নতুন করে আবিষ্কার করে নিতে হয়।

 কিছু কবিতা কপি করে দিয়েছে শ্রীমতী রূপা ভট্টাচার্য। আর, কবিতাগুলির প্রথম পঙক্তির বর্ণানুক্রমিক সূচি তৈরি করে দিয়েছে শ্রীমতী বন্দনা ও চন্দনা দত্তচৌধুরী। ওরা দ্বিরালাপে বিশ্বাসী; অতএব তাদের ধন্যবাদ জানাব না। আর, প্রকাশক, এবং মুশায়েরার সম্পাদক, শ্রীমান সুবল সামন্ত তো আমার প্রিয় অনুজ ও সহযাত্রী।

 এই বয়ান কবিতা-সংগ্রহের ভূমিকা নয়। যদি কখনও দ্বিতীয় খণ্ড বেরোয়, তখন না হয় পেছন ফিরে তাকানো যাবে। আপাতত শুধু এইটুকু জানাতে পারি, কথার বাইরের কথা আর কথার ভেতরের কথা সম্পর্কে আমার বিস্ময় আজও ফুরোয়নি। কবিতার আশ্চর্য নৈঃশব্দ্য বিহ্বল করে আমাকে, এখনও।