পাতা:কবিতাসংগ্রহ ১ - তপোধীর ভট্টাচার্য.pdf/১১৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

বেওয়ারিশ লাশের কবরে
অজস্র মণিকর্ণিকা জাগুক ইতিহাসের ঐ ধ্বংসস্তূপে
মহল্লা কাঁপিয়ে হরিধ্বনি দিক
শববাহকেরা, গায়ে শুধু থাক রামনামাবলী

এখন মুষলপর্ব, প্রতি হাতে কুশ হয়ে উঠছে শানিত বল্লম
প্রতিটি আস্তিনে লুকিয়ে রয়েছে বাঘনখ
এখন মুষলপর্ব, ভ্রাতৃদ্বিতীয়ার ফোঁটা বিষ হয়ে যাচ্ছে দ্রুত
প্রতিটি পথের বাঁকে ওঁৎ পেতে আছে গুপ্তঘাতকেরা
নতুন প্রভাসে এখন পদ্মবীজ ছড়িয়ে দিচ্ছে মহামারী
এখন রাতের আজান থেকে মাথা চাড়া দিচ্ছে।
হিংসার স্থাপত্য
এখন সময় ক্রমাগত হাঁটছে পেছনের দিকে
যেখানে অন্ধ তমসাবৃত অসূর্যার দেশ
যেখানে শুধু আত্মহনন
অর্থাৎ এখন কল্যাণ শান্তি হয়েই আছে
আজ অন্ধ মানুষেরা খোঁজে অন্ধতর মানুষের প্রস্তাবনা
আজ নুলো মানুষেরা খুঁজে নেয় আরো-নুলো মানুষের ভিড়
এই চমৎকার সংঘের শরণ ভালো আজ
এই নিরপেক্ষ ধর্মের শরণ নিয়ে ভালো দখলের পতাকা উড়ানো
আকাশে-বাতাসে শুনছি জয়জয়কার
অশোকের লিপিমালা থেকে মুছে দিচ্ছি মহেন্দ্রের যাত্রাবিবরণ
মুছে দিচ্ছি উদয়নকথা পুরোনো ভূগোল থেকে
ফুটে উঠছে আহা নতুন প্রতীক আর টীকা-ভাষ্য আর্য উপনিবেশে
এই কৃষ্ণপক্ষে রামানন্দ-কবিরের দোঁহা মুছে দিয়ে
লিখে নিচ্ছি নয়া কালাপাহাড়ের চরিতমানস, যেমন মিথিলা পুড়ে
ছাই হয়ে গেলে জনক জানান পোড়ে নি কিছুই
তেমনি নতুন বেদান্ত শিখি ভাঙনের আর রক্তমাখা ত্রিপিটক ছিঁড়ে
টুকরো-টুকরো ইটে লিখি রাম-নাম

জয় হে জয় হে ভারতভাগ্যবিধাতা, পাঞ্জাব-সিন্ধু-গুজরাট-মারাঠায়
উথ্‌লে উঠছে শান্তির জলধিতরঙ্গ
মিলিন্দের প্রজ্ঞা থেকে ফুটছে ঐ সোনালি কমল, আরো একবার
জাগল জাগল ডাকিনী-যোগিনী
জানাজার আয়োজন থেকে, জয় জয় বলো নিরপেক্ষ ধর্মের শরণে।
মঠ আর গির্জার চূড়োয় নামুক নামুক অন্ধকার

১০৯