পাতা:কবিতাসংগ্রহ ১ - তপোধীর ভট্টাচার্য.pdf/১১৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

কতটা মিশেছে কৈবর্ত বিদ্রোহ? ঐ শৈব আগমের রহস্যমণ্ডল কাকে চায়?
পদ্মবীজ একথা জানে না, শুধু মুচড়ে ওঠে
ঘৃণায় -আক্রোশে তার রক্তাক্ত শরীর, ছেড়াখোঁড়া
ইতিহাস থেকে তুলে আনে
ক্রোধ ও হিংসার নষ্ট কথামালা

অন্ধ, জাগো, আর কত অন্ধকার চাই? প্রতিদিন
মৃত্যুর গরল মেনে নিয়ে
তর্ক-ছলে আর কত নিজেকে ভোলাবে? প্রতি রাতে
কাঁটাতার-ঘেরা এই অপমান ভুলে
স্মৃতির উজানে যদি যেতে চাও, কেন চাও? কতটুকু
আলো পেলে আঁধার শনাক্ত করা যাবে?

আলো, জন্মান্ধের কাঙাল বাসনা
আলো, বিনিদ্র রাতের ইস্তাহার
আলো, শেকল-ছেড়ার অফুরান পুনর্বিবেচনা
আলো, ধর্মাধর্মহীন ভাষার প্রণাম

ঘৃণায় উচ্ছিষ্ট হলো দিন
আক্রোশে উচ্ছিষ্ট হলো রাত
এই ঘৃণা শুধু ঘৃণা, তার কোনো প্রতিশব্দ নেই।
ক্রোধ আজ শুধু ক্রোধ, আর কোনো রূপক চাইনা
আক্রোশে উচ্ছিষ্ট হলো রাত
ঘৃণায় উচ্ছিষ্ট হলো দিন।

উদ্দালক যেমন জেনেছে।
আর জেনেছে গৌতম
কেন অন্ধ সে-কথা জানো না অন্ন পথ, অন্নই পাথেয়
অন্ন ছাড়া সত্যের স্ফুরণ নেই।
এই অন্ন রামে নেই, নেই রহিমেও
এই অন্ন চেয়েছিল ঈশ্বরী পাটনী অন্ন সাধ্য, অন্নই সাধন
ডিহিদার খুশি হলে অন্ন দেয়
কিংবা বাড়া ভাতে ছাই দিয়ে যায়
মুকুন্দরামের শিশু কাঁদে আজও
ওদনের তরে, সেই অশ্রু অন্নদা দেখে না অন্ন ভূমা, অন্নই দর্শন
শতাব্দীর রাক্ষসীবেলায়

১১২