পাতা:কমলাকান্ত - বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/২১১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
কমলাকান্তের দপ্তর।
১৯৭

নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করিতে লাগিলাম। যুক্তকরে বলিলাম, “হে দ্বিরেফসত্তম! কোন্ অপরাধে দুঃখী ব্রাহ্মণ তোমার নিকট অপরাধী যে, তুমি তাহার লেখা পড়ার ব্যাঘাত করিতে আসিয়াছ? দেখ, আমি এই বঙ্গদর্শনে পত্র লিখিতে বসিয়াছি—পত্র লিখিলে আফিঙ্গ আসিবে— তুমি কেন ঘ্যান্ ঘ্যান্ করিয়া তাহার বিঘ্ন কর?” আমি প্রাতে একখানি বাঙ্গালা নাটক পড়িতেছিলাম—তখন অকস্মাৎ সেই নাটকীয় রাগগ্রস্ত হইয়া বলিতে লাগিলাম—“হে ভৃঙ্গ! হে অনঙ্গরঙ্গ তরঙ্গবিক্ষেপকারিন্! হে দুর্দ্দান্ত পাষণ্ডভণ্ডচিত্তলণ্ডভণ্ডকারিন্! হে উদ্যানবিহারিন্-কেন তুমি ঘ্যান্ ঘ্যান্ করিতেছ? হে ভৃঙ্গ! হে দ্বিরেফ! হে ষট‍্পদ! হে অলে! হে ভ্রমর! হে ভোমরা! হে ভোঁ ভোঁ! —”

 ভ্রমর ঝুপ করিয়া আসিয়া সাম‍্নে বসিল। তখন গুন গুন করিয়া গলা দুরস্ত করিয়া বলিতে লাগিল—আমি অহিফেন-প্রসাদে সকলেরই কথা বুঝিতে পারি—আমি স্থিরচিত্তে শুনিতে লাগিলাম।