পাতা:করিম সেখ - জলধর সেন.pdf/১০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

করিম সেখ তাহাতে ব্যয় সংকুলান হইল না । গ্রামের মহাজন রামমোহন পোদারের নিকট হইতে মাসিক শতকরা দুই টাকা সুদে সে আরও আড়াই শত টাকা ধার করিল। এনাতুল্লা মনে করিল, এবার যেমন ধান হইয়াছে আর দুই বৎসর এমন ধান পাইলে সে মহাজনের ধার ত শোধ করিবেই, অধিকন্তু বাড়ীর পশ্চিমের ভিটায় একখানি বড় ঘর তুলিবে । বসিরাদির বিবাহো করিমের আনন্দ দেখে কে ? সে বাড়ীর কাজ কৰ্ম্ম ফেলিয়া দিনরাত বন্ধুর বাড়ীতেই থাকে ; বিবাহের যাহা কিছু আয়োজন করিমই :তাহার ভার গ্ৰহণ করিল। যে দিন বিবাহের সম্বন্ধ পাকা করিবার কথা, সে দিন করিমই এনাতুল্লার সঙ্গে গেল। মেয়ে দেখিয়া তাহার খুব পসন্দ হইল,— মেয়ে যেমন সুন্দরী, তেমনই বয়স্থ ; চাষার ঘরে এমন সুন্দরী মেয়ে বড় একটা দেখিতে পাওয়া যায় না। করিম মনে মনে তাহার মিতের অদৃষ্টের যথেষ্ট প্ৰশংসা করিল। হঁয়, যদি বিবাহ করিতে হয় তা এমন বউই চাই । করিম বাড়ী আসিয়া বউয়ের রূপের কথা মিতেকে বলিল। এ তল্লাটের মধ্যে, চাষ মুসলমান দূরে থাকুক, বড় বড় হিন্দুর ঘরেও এমন পৱী নাই, এ কথা করিম বসিরদিকে এবং পাড়ার আর দশজনকে জানাইয়া দিল। সকলেই এনাতুল্লার পসন্দের তারিফ করিল। যথাসময়ে বিবাহ হইয়া গেল। গ্রামের অনেক আত্মীয় কুটুম্বকে সে নিমন্ত্ৰণ করিয়াছিল। এনাতুল্লা মুক্তহস্তে অর্থব্যয় করিল ; সকলেই বলিল, ই বিবাহে রীতিমত ঘটা হইয়াছে। এনাতুল্লার সাতটা পাঁচটা নাই,একই ছেলে; তাহার বিবাহে এই রকম দু’পয়সা ব্যয় না করিলে কি ভাল দেখায় ? এনাতুল্লা এত অর্থব্যয়-সার্থক মনে করিল।