পাতা:কলিকাতার ইতিহাস.djvu/১১৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ষষ্ঠ অধ্যয়;
১০৯

 এই তীর্থের উৎপত্তি ও ইতিবৃত্ত সম্বন্ধে এস্থলে সবিশেষ আলো' চনা করা অনাবশ্যক। মার্কণ্ডেয় পুরাণ, তন্ত্রসার, এবং অন্যান্য পুরাণ ও তন্ত্রে এবিষয়ের সবিস্তার বর্ণনা আছে। কথিত আছে যে, মহাদেবীর মন্দির ঠিক নদীর ধারে অর্থাৎ ঘাটের উপর ছিল। এই জন্য সহজেই স্বীকার করিয়া লওয়া হইয়াছে যে, ইহা হইতেই বর্তমান কালীঘাট নামের উৎপত্তি বৃহন্নীলতন্ত্রে উক্ত হইয়াছে যে, অতি প্রাচীনকালে অতি অল্পসংখ্যক কয়েকজন ভক্ত মাত্র এই কালীদেবীর কথা জ্ঞাত ছিলেন। যৎকালে সুপ্রসিদ্ধ হিন্দু নরপতি বল্লালসেন প্রাদুর্ভূত হইয়াছিলেন, সেই সময় হইতে যৎকালে মোগল সম্রাট আকবর রাজত্ব করিতেন এবং অমর কবিকঙ্কণ তাঁহার ভক্তিরসাত্মক চণ্ডীকাব্য প্রণয়ন করেন, সেই সময় পর্যন্ত নানাস্থানে নানাভাবে এই তীর্থ প্রসঙ্গের উল্লেখ দেখিতে পাওয়া যায়। কথিত আছে যে, কলিকাতার অদূরস্থ বড়িশানিবাসী সন্তোষ রায় ১৮০৯ সালে বর্তমান মন্দির নির্মাণ করাইয়া দেন।

 পাদরি ওয়ার্ড সাহেব লিখিয়াছেন—“কলিকাতার নিকট কালী- ঘাটে এই দেবীর একটি বিখ্যাত মন্দির আছে; হিন্দুরা বলে, সমস্ত এশিয়া, এমন কি সমস্ত পৃথিবী এই দেবীর পূজা করিয়া থাকে। এই দেবীর নিকট প্রতিদিন যে সকল পূজার সামগ্রী অর্পিত হয়, তাহার পরিমাণ এত অধিক যে, শুনিলে আশ্চর্য্যান্বিত হইতে হয়; অতি দুর্যেগের দিনেও অন্যূন ৩২০ পাউণ্ড (৪ মণ) চাউল, ২৪ পাউণ্ড চিনি, ৪০ পাউণ্ড সন্দেশ, ১২ পাউও দ্বি, ১০ পাউণ্ড ময়দা, ১০ কোয়ার্ট দুধ, এক পেক ডাল, ৮০০ কলা, ও ন্যূনাধিক পাঁচ শিলিঙ মুল্যের অন্যান্য দ্রব্য প্রদত্ত হইয়া থাকে; তদ্ভিন্ন আট দশটি ছাগ-বলি হয় সাধারণ দিনে এই পরিমাণের তিনগুণ, এবং