পাতা:কলিকাতার ইতিহাস.djvu/১৪৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ষষ্ঠ অধ্যায়।
১৪৩

ভারতে প্রথম আগত হইলে তাহাদিকে বাসস্থান প্রদান, এই কয়েকটি উদ্দেশ্যেই ইহার প্রতিষ্ঠা। এই কলেজের সহিত সংসৃষ্ট একটি ছাত্রাবাস ছিল, এবং কয়েকটি বৃত্তিও নির্ধারিত হইয়াছিল— ঐ সকল বৃত্তিধারী ছাত্রের। বিনা ব্যয়ে আহার্য্য ও শিক্ষা প্রাপ্ত হইত। এই কলেজ পূর্ব্বে বর্তমান শিবপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের বাড়ীতে অবস্থিত ছিল। তথা হইতে ২৩৩ নং সার্কুলার রোডে স্থানান্তরিত হয়, এবং পরে আবার তথা হইতে ২২৪ নং লোয়ার সাকুলার রোডে স্থানান্তরিত হইয়াছে।

 উল্লিখিত সংক্ষিপ্ত বিবরণ হইতে যে পরিচয় পাওয়া যায়, তাহাতে কলিকাতাবাসীদিগের স্কন্ধে বিদ্যাশিক্ষার প্রতি ঔদাসীন্য ও উপেক্ষাপ্রদর্শন দোষের আবোপ করিতে পারা যায় না। বরং ইহাই বাধ হয় যে, সেকালে তাঁহারা ভবিষ্যৎ বংশের মানসিক ও নৈতিক শিক্ষার উন্নতিসাধনে প্রগাঢ় যত্ন ও অনুরাগ প্রদর্শন করিয়া- ছেন, এবং গবর্ণমেণ্ট ও অন্যান্য রাজপুরুষেরাও আপনাদের দায়িত্ব স্বীকার করিয়া তদনুরূপ কার্য করিতে পশ্চাৎপদ হন নাই। উদারচেতা ওয়ারেন হেষ্টিংস ১৭৮০ সালে ইউরোপীয় আদর্শে কলি- কাতা মাদ্রাসা স্থাপন করিয়া দেশের একটী মহা অভাব দূর করেন। আরবী ও পারসী ভাষায় শিক্ষাপ্রদানের উদ্দেশ্যে এই বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হইয়াছিল, কারণ তৎকালে ঐ দুই ভাষাই আদালতের প্রচলিত ভাষা ছিল। এই বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সময়ে মহারাজ নব- কৃষ্ণ বাহাদুর এককালীন ৩,০০,০০০ টাকা দান করিয়া আপনার বদান্যতার পরিচয় প্রদান করেন। ওয়ারেন হেষ্টিংস হিন্দু পণ্ডিত গণের প্রতিও অনুগ্রহ বিস্তারে কুণ্ঠিত হন নাই। প্রায় এই সময়ে তাঁহারই উৎসাহে আনুকূল্যে হিন্দু ও মুসলমান গ্রন্থসমূহের অনুবাদ