পাতা:কলিকাতার ইতিহাস.djvu/১৫৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ষষ্ঠ অধ্যায়।
১৫৩

কিন্তু দেশের উচ্চতম জাতির ঘরে জন্মিয়াছিলেন; এবং ইনি যে শ্রেণীর অন্তর্ভুক্ত ছিলেন, সে শ্রেণীর লোকে ‘সামান্য জীবনযাপন ও উচ্চচিন্তার মহান আদর্শ প্রকৃত জীবনে প্রদর্শন করিয়া থাকেন। এই জন্যই আমরা দেখিতে পাই, ঈশ্বরচন্দ্র আপনার বিদ্যা বুদ্ধি উৎসাহ উদ্যম, অর্থ ক্ষমতা, এমন কি জীবন পর্যন্ত, সমস্তই মানব- জাতির হিতার্থে উৎসর্গ করিতে পারিয়াছিলেন। হিন্দু তিনি বাল- বিধবদের পুনর্বিবাহের যে আন্দোলন উপস্থিত করিয়াছিলেন, তাহা- তেই তাহার পরদুঃখকাতরতার প্রকৃষ্ট পরিচয় পাওয়া যায়। তাঁহার আর একটা বিশেষ গুণ ছিল এই যে, যাহা তিনি করিতেন, তাহা সর্বান্তঃকরণের সহিতই করিতেন। তাঁহার পরোপকারের কথা আর কি বলিব? সুপ্রসিদ্ধ লেখক এন, এন ঘোষ যথার্থই বলিয়াছেন যে, “যখন বিদ্যাসাগর মরিলেন, তখন বদান্যতা-দেবী আর্তনাদ করিয়া উঠিলেন।” সর্বপ্রকার কপটতা ও কৃত্রিমতা তিনি অন্তরের সহিত ঘৃণা করিতেন। সাংসারিক শ্রীবৃদ্ধির নিমিত্ত তিনি বিবেকবুদ্ধিকে কখন জলাঞ্জলি দেন নাই, বিদ্যালয়সমূহের সংস্থাপনে, বিশেষতঃ মেট্রপলিটান কলেজের প্রতিষ্ঠায়, তিনি যেরূপ আয়াস স্বীকার করিয়াছিলেন, তাহা অতীব প্রশংসার বিষয়; কারণ তখন সকলেই মনে করিয়াছিল, বাঙ্গালীর এ চেষ্টা নিশ্চয়ই বিফল হইবে। এরূপ অবস্থায় তিনি একাকী, বাহিরের বিন্দুমাত্র সাহায্য না লইয়া, কেবল দেশীয় শিক্ষক দ্বারা যেরূপ উৎকৃষ্টভাবে বিদ্যালয়ের কার্য্য পরিচালনা করিয়া গিয়াছেন, তাহা যৎপরো নাস্তি বিস্ময়জনক।

 পূর্বেই বলা হইয়াছে, লর্ড আমহার্ষ্ট ১৮২৪ অব্দে সংস্কৃত কলেজ স্থাপন করেন। সে সময়ে উহার কার্যপরিচালনার্থ একটি কমিটি নিযুক্ত হইয়াছিল। ছাত্রদিগের জন্য কতকগুলি মাসিক বৃত্তিও