পাতা:কলিকাতার ইতিহাস.djvu/১৭৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৬৮
কলিকাতার ইতিহাস।

মূল কারণ নহে, বাণিজ্যবিস্তারের প্রবল বাসনাই উহার মুলে নিহিত। সামরিক অভিযানসমূহের মুলেও ঐ প্রবৃত্তি নিহিত। পূর্বে রাজারা প্রভুত্ব-সংস্থাপনোদ্দেশ্যে দিগ্বিজয় ও রাজাধিকার করিতেন; এখন কিন্তু ধনস্পৃহাই উহার মুলীভূত কারণ। নীরস অনুর্বর দেশে আধিপত্য সংস্থাপন করিতে কোনও শক্তিশালী জাতিই ব্যগ্র হয় না। কথিত আছে যে, সংসৰ্গারা লোকের চরিত্রের পরিচয় পাওয়া যায়। সেইরূপ ইহাও সত্য যে, ধনের পরিমাণ দ্বারা জাতি বিশেষের অবস্থার পরিচয় পাওয়া যায়। প্রাচীন গ্রীস, রোম বা ভারতে হয় ত এ ভাব প্রবল ছিল না; কিন্তু এখনকার অবস্থা ঐরূপই। অধুনা জাতিবিশেষের ক্ষমতা ইউরোপীয় মানবতানুসারে তাহার সামরিক শক্তিরা পরিমিত হইয়া থাকে। পরন্তু সেটা অর্থের ব্যাপার, কারণ তাঁহারাই বলেন, অর্থ ই সমরের পেশী।

 কলিকাতার ক্রমোন্নতিতে বাণিজ্যই প্রধান সহায়—বোধ হয়, সর্বপ্রধান সহায়; সুতরাং বাণিজ্যঘরা এই নগরের কিরূপ অবস্থান্তর হইয়াছে, তৎসম্বন্ধে কিঞ্চিৎ বলা আবশ্যক। অপরাপর জাতি ও দেশের সহিত বঙ্গবাসীদিগের কোন সময়ে বাণিজ্য-সংস্রব ছিল, তাহা নির্ণয় করিবার ভার পুরাতত্ত্বজ্ঞদিগের হস্তে অর্পণ করা যাইতে পারে। হীরেন, ম্যাকফার্সন ও অন্যান্য খ্যাতনামা লেখক- গণ এ বিষয়ে অনেকটা আভাস দিয়াছেন। সার উইলিয়ম হণ্টার তাঁহার উড়িষ্যা-বিষয়ক গ্রন্থে লিখিয়াছেন যে,পূর্বে বাঙ্গালীরা সমুদ্রে যাতায়াত করিত, কিন্তু বাণিজ্যের তদানীন্তন কেন্দ্র তমোলুক নগর ধ্বংস হওয়াতে তাহাদের সমুদ্র-গমন তিরোহিত হইয়াছে। বৌদ্ধদিগের প্রাধান্যকালে বাঙ্গালীরা পূর্বে ও পশ্চিমে উভয় দিকেই বাণিজ্য-পোত প্রেরণ করিত, এবং আর্কিপেলেগো অর্থাৎ